ওয়ালমার্টের অর্ডার স্থগিত, বিপদে ২ হাজার ৩৭৭ রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান
নিজস্ব প্রতিবেদক, দৈনিক আশুলিয়া
যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের রপ্তানি পণ্যের ওপর পুনরায় ৩৫ শতাংশ পাল্টা শুল্ক আরোপ করায় দেশের প্রধান রপ্তানি খাত তৈরি পোশাকশিল্প বড় ধরনের হুমকির মুখে পড়েছে। এরই মধ্যে আমেরিকার বৃহৎ খুচরা বিক্রেতা ওয়ালমার্ট বাংলাদেশ থেকে পোশাক ক্রয়াদেশ স্থগিত করেছে। এমন পরিস্থিতিতে দেশের রপ্তানি খাত, বিশেষ করে পোশাকশিল্পে বিনিয়োগ, কর্মসংস্থান ও সামগ্রিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা গভীর সংকটে পড়ার আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) জানায়, ২০২৪-২৫ অর্থবছরে বাংলাদেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে পণ্য রপ্তানি করেছে মোট ২ হাজার ৩৭৭টি প্রতিষ্ঠান। যুক্তরাষ্ট্রের নতুন শুল্ক নীতির ফলে এসব রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান ঝুঁকির মধ্যে পড়বে বলেই আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা।
বিশ্ববাজারে বাংলাদেশের পোশাক খাতের দীর্ঘদিনের অর্জন এখন হুমকির মুখে। কারণ যুক্তরাষ্ট্রই বাংলাদেশের তৈরি পোশাকের একক বৃহত্তম বাজার। সাম্প্রতিক তথ্য বলছে, দেশের মোট রপ্তানি আয়ের ৮০ শতাংশই আসে পোশাক খাত থেকে। ২০২৪ সালের হিসাবে বাংলাদেশ পোশাক রপ্তানি করে ৩৯ দশমিক ৩৫ বিলিয়ন ডলার আয় করেছে, যার মধ্যে ৭ দশমিক ৫৪ বিলিয়ন ডলার এসেছে শুধু যুক্তরাষ্ট্র থেকে।
বিশ্বখ্যাত বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প নতুন করে বাংলাদেশের পণ্যের ওপর ৩৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের ঘোষণা দেওয়ার পর ওয়ালমার্টের মতো কোম্পানিগুলো ইতোমধ্যে পোশাকের অর্ডার স্থগিত করতে শুরু করেছে।
প্যাট্রিয়ট ইকো অ্যাপারেল লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইকবাল হোসেন জানান, “ওয়ালমার্টের জন্য ১০ লাখ সাঁতারের পোশাকের একটি বড় অর্ডার স্থগিত করা হয়েছে। আগস্টের ১ তারিখ থেকে ট্রাম্প প্রশাসনের শুল্ক কার্যকর হলে আমাদের জন্য অর্ডার ধরে রাখা প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়বে।”
বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থানে অনিশ্চয়তা
বিজিএমইএ ও বিকেএমইএ সূত্রে জানা গেছে, যুক্তরাষ্ট্রে চাহিদা বাড়ায় গত কয়েক বছরে বাংলাদেশি গার্মেন্ট মালিকরা বিপুল বিনিয়োগ করেছেন। নতুন কারখানা, প্রযুক্তি এবং দক্ষ শ্রমিক গড়ে তোলা হয়েছে। কিন্তু এখন এই বিনিয়োগগুলো বিপদে পড়তে যাচ্ছে।
বিশ্লেষকদের আশঙ্কা
বিশ্লেষকরা বলছেন, যদি সরকার দ্রুত কূটনৈতিক উদ্যোগ না নেয় ও শুল্ক হ্রাসে সফল না হয়, তবে শুধু রপ্তানি নয়, গোটা শ্রমবাজার, শ্রমিকদের জীবনযাত্রা ও দেশের সামাজিক স্থিতিশীলতা ভয়াবহভাবে প্রভাবিত হতে পারে।
চট্টগ্রাম ও ঢাকা বন্দরে অচলাবস্থা শঙ্কা
পোশাক রপ্তানি হ্রাস পেলে দেশের প্রধান বন্দরগুলোতেও পণ্যজট তৈরি হতে পারে। এর ফলে বন্দরের আয় কমে যাওয়ার পাশাপাশি পরিবহন খাতেও বিপর্যয় দেখা দিতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
📌 বিশেষ মন্তব্য:
বাংলাদেশের রপ্তানিনির্ভর অর্থনীতিতে তৈরি পোশাক শিল্প একটি মূল চালিকাশক্তি। যুক্তরাষ্ট্রের পাল্টা শুল্ক দেশের জন্য শুধু অর্থনৈতিক নয়, কূটনৈতিকভাবেও একটি বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এখনই সমন্বিত উদ্যোগ না নিলে ভবিষ্যতে এই খাত থেকে দেশ হারাতে পারে তার আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতামূলক অবস্থান।
আরও পড়ুন:
📌 যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের পোশাকের বাজার বিশ্লেষণ
📌 কারখানাগুলো কীভাবে প্রস্তুতি নিচ্ছে শুল্ক মোকাবেলায়
📌 শ্রমিকদের উদ্বেগ: "চাকরি থাকবে তো?"
✍ প্রতিদিনের খবর, আপনার এলাকায় — দৈনিক আশুলিয়া
📞 ফোন: ০১৭xxxxxxx
🌐 ওয়েব: www.dainikashulia.com
📩 ইমেইল: news@dainikashulia.com
ওয়ালমার্টের অর্ডার স্থগিত, বিপদে ২ হাজার ৩৭৭ রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান
নিজস্ব প্রতিবেদক, দৈনিক আশুলিয়া
যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের রপ্তানি পণ্যের ওপর পুনরায় ৩৫ শতাংশ পাল্টা শুল্ক আরোপ করায় দেশের প্রধান রপ্তানি খাত তৈরি পোশাকশিল্প বড় ধরনের হুমকির মুখে পড়েছে। এরই মধ্যে আমেরিকার বৃহৎ খুচরা বিক্রেতা ওয়ালমার্ট বাংলাদেশ থেকে পোশাক ক্রয়াদেশ স্থগিত করেছে। এমন পরিস্থিতিতে দেশের রপ্তানি খাত, বিশেষ করে পোশাকশিল্পে বিনিয়োগ, কর্মসংস্থান ও সামগ্রিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা গভীর সংকটে পড়ার আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) জানায়, ২০২৪-২৫ অর্থবছরে বাংলাদেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে পণ্য রপ্তানি করেছে মোট ২ হাজার ৩৭৭টি প্রতিষ্ঠান। যুক্তরাষ্ট্রের নতুন শুল্ক নীতির ফলে এসব রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান ঝুঁকির মধ্যে পড়বে বলেই আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা।
বিশ্ববাজারে বাংলাদেশের পোশাক খাতের দীর্ঘদিনের অর্জন এখন হুমকির মুখে। কারণ যুক্তরাষ্ট্রই বাংলাদেশের তৈরি পোশাকের একক বৃহত্তম বাজার। সাম্প্রতিক তথ্য বলছে, দেশের মোট রপ্তানি আয়ের ৮০ শতাংশই আসে পোশাক খাত থেকে। ২০২৪ সালের হিসাবে বাংলাদেশ পোশাক রপ্তানি করে ৩৯ দশমিক ৩৫ বিলিয়ন ডলার আয় করেছে, যার মধ্যে ৭ দশমিক ৫৪ বিলিয়ন ডলার এসেছে শুধু যুক্তরাষ্ট্র থেকে।
বিশ্বখ্যাত বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প নতুন করে বাংলাদেশের পণ্যের ওপর ৩৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের ঘোষণা দেওয়ার পর ওয়ালমার্টের মতো কোম্পানিগুলো ইতোমধ্যে পোশাকের অর্ডার স্থগিত করতে শুরু করেছে।
প্যাট্রিয়ট ইকো অ্যাপারেল লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইকবাল হোসেন জানান, “ওয়ালমার্টের জন্য ১০ লাখ সাঁতারের পোশাকের একটি বড় অর্ডার স্থগিত করা হয়েছে। আগস্টের ১ তারিখ থেকে ট্রাম্প প্রশাসনের শুল্ক কার্যকর হলে আমাদের জন্য অর্ডার ধরে রাখা প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়বে।”
বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থানে অনিশ্চয়তা
বিজিএমইএ ও বিকেএমইএ সূত্রে জানা গেছে, যুক্তরাষ্ট্রে চাহিদা বাড়ায় গত কয়েক বছরে বাংলাদেশি গার্মেন্ট মালিকরা বিপুল বিনিয়োগ করেছেন। নতুন কারখানা, প্রযুক্তি এবং দক্ষ শ্রমিক গড়ে তোলা হয়েছে। কিন্তু এখন এই বিনিয়োগগুলো বিপদে পড়তে যাচ্ছে।
বিশ্লেষকদের আশঙ্কা
বিশ্লেষকরা বলছেন, যদি সরকার দ্রুত কূটনৈতিক উদ্যোগ না নেয় ও শুল্ক হ্রাসে সফল না হয়, তবে শুধু রপ্তানি নয়, গোটা শ্রমবাজার, শ্রমিকদের জীবনযাত্রা ও দেশের সামাজিক স্থিতিশীলতা ভয়াবহভাবে প্রভাবিত হতে পারে।
চট্টগ্রাম ও ঢাকা বন্দরে অচলাবস্থা শঙ্কা
পোশাক রপ্তানি হ্রাস পেলে দেশের প্রধান বন্দরগুলোতেও পণ্যজট তৈরি হতে পারে। এর ফলে বন্দরের আয় কমে যাওয়ার পাশাপাশি পরিবহন খাতেও বিপর্যয় দেখা দিতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
📌 বিশেষ মন্তব্য:
বাংলাদেশের রপ্তানিনির্ভর অর্থনীতিতে তৈরি পোশাক শিল্প একটি মূল চালিকাশক্তি। যুক্তরাষ্ট্রের পাল্টা শুল্ক দেশের জন্য শুধু অর্থনৈতিক নয়, কূটনৈতিকভাবেও একটি বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এখনই সমন্বিত উদ্যোগ না নিলে ভবিষ্যতে এই খাত থেকে দেশ হারাতে পারে তার আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতামূলক অবস্থান।
আরও পড়ুন:
📌 যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের পোশাকের বাজার বিশ্লেষণ
📌 কারখানাগুলো কীভাবে প্রস্তুতি নিচ্ছে শুল্ক মোকাবেলায়
📌 শ্রমিকদের উদ্বেগ: "চাকরি থাকবে তো?"
✍ প্রতিদিনের খবর, আপনার এলাকায় — দৈনিক আশুলিয়া
📞 ফোন: ০১৭xxxxxxx
🌐 ওয়েব: www.dainikashulia.com
📩 ইমেইল: news@dainikashulia.com