কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি ॥
দেশের যেকোনো মাজার, মসজিদ, মাদ্রাসা ও এতিমখানায় হামলা চালানো বা ধ্বংসের চেষ্টা করলে কাউকেই ছাড় দেওয়া হবে না বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন।

রবিবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদ পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ হুঁশিয়ারি দেন। ধর্ম উপদেষ্টা বলেন, “মাজারে কিছু হামলার ঘটনা ঘটেছে, যার রিপোর্ট আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে রয়েছে। আমি আন্তঃমন্ত্রণালয় আইনশৃঙ্খলা কমিটির সদস্য। এসব বিষয় প্রতিমাসেই আলোচনায় আসে।”

প্রতিটি মাজার ও মসজিদ কর্তৃপক্ষকে সিসি ক্যামেরা স্থাপনের আহ্বান জানিয়ে তিনি আরও বলেন, এতে হামলাকারী চিহ্নিত করা সহজ হবে। পাশাপাশি সামাজিক সচেতনতার গুরুত্ব তুলে ধরে তিনি বলেন, “প্রতিটি মাজারে পুলিশ মোতায়েন সম্ভব নয়, তাই সর্বস্তরের মানুষকে ধর্মীয় স্থাপনার নিরাপত্তায় অংশ নিতে হবে।”

তিনি জানান, ইতোমধ্যে বিভিন্ন স্থানে হামলার ঘটনায় মামলা হয়েছে এবং কিছু ব্যক্তি গ্রেপ্তারও হয়েছেন। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী নির্দিষ্ট মামলার ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেবে।

পাগলা মসজিদের উন্নয়ন পরিকল্পনা প্রসঙ্গে ধর্ম উপদেষ্টা জানান, এখানে ৯০ কোটি ৬৪ লাখ টাকা ১৩টি ব্যাংক অ্যাকাউন্টে এফডিআর হিসেবে জমা আছে। এই তহবিল থেকে প্রাপ্ত লভ্যাংশ গরিব, অসহায়, অনাথ ও অসুস্থদের জন্য ব্যয় করা হয়। ইতোমধ্যে প্রায় ৮০ লাখ টাকা বিতরণ করা হয়েছে। ভবিষ্যতে দরিদ্র শিক্ষার্থীদেরও এই তহবিল থেকে সহায়তা দেওয়া হবে।

তিনি আরও জানান, খুব শিগগির পাগলা মসজিদের আদলে একটি দৃষ্টিনন্দন ১০ তলা বিশিষ্ট ইসলামিক কমপ্লেক্স নির্মাণ কাজ শুরু হবে। আধুনিক তুরস্কের বসফরাস প্রণালীর পাশে অবস্থিত মাল্টিপারপাস মসজিদের আদলে নির্মিত এই কমপ্লেক্সে থাকবে মাদ্রাসা শিক্ষা, সমৃদ্ধ লাইব্রেরি, ক্যাফেটেরিয়া, আইটি সেকশন এবং অনাথ-এতিমদের জন্য লেখাপড়ার ব্যবস্থা। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের মেয়াদের মধ্যেই এর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।

এর আগে সকাল সাড়ে ৯টায় ধর্ম উপদেষ্টা সদর উপজেলার মারিয়া ইউনিয়নের মোল্লাপাড়া এলাকায় জেলা মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র পরিদর্শন করেন। দুপুরে তিনি কিশোরগঞ্জ শহরের আল জামিয়াতুল ইমদাদিয়া মাদ্রাসা আয়োজিত “ইসলামী অর্থনীতির গুরুত্ব” শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে যোগ দেন।

এ সময় জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ কিশোরগঞ্জ জেলা শাখার সভাপতি প্রভাষক হাফেজ মাওলানা আলমগীর হোসাইন তালুকদারসহ গণ্যমান্য ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।