📰 দৈনিক আশুলিয়া
তারিখ : মঙ্গলবার, ২ সেপ্টেম্বর ২০২৫
ধর্ম ও সমাজ ডেস্ক : সৃষ্টির শুরু থেকেই নারী ও পুরুষ পরিবার, সমাজ ও সভ্যতায় নিজ নিজ অবস্থান থেকে অবদান রেখে আসছে। ইসলাম নারীর এই অবদানকে খাটো করে দেখেনি, বরং পবিত্র কোরআনে নারী-পুরুষ উভয়ের ভূমিকা সমানভাবে স্বীকৃত হয়েছে।
মহান আল্লাহ তায়ালা বলেন—
“হে মানুষ! নিশ্চয়ই আমি তোমাদেরকে সৃষ্টি করেছি একজন নারী ও পুরুষ থেকে এবং তোমাদেরকে বিভিন্ন গোত্র ও সম্প্রদায়ে বিভক্ত করেছি, যেন তোমরা পরস্পরকে চিনতে পারো।” (সুরা হুজুরাত, আয়াত : ১৩)
ঘরের শ্রমও মূল্যবান
ইসলাম ঘরের জীবনে শৃঙ্খলা রক্ষায় নারীর ভূমিকা অপরিহার্য করেছে। বস্তুবাদী সমাজ যেখানে নারীর ঘরের শ্রমকে মূল্যহীন বলে, ইসলাম সেখানে নারীর শ্রমকে সম্মানিত করেছে। ঘরমুখী নারীর অবদান—সন্তান প্রতিপালন, পরিবারের নৈতিক ভিত্তি দৃঢ়করণ ও সামাজিক শান্তি—অমূল্য সম্পদ। এজন্য পুরুষের ওপর নারীর ভরণপোষণকে ফরজ করা হয়েছে।
বাইরে কাজের অনুমতি
তবে ইসলাম নারীর বাস্তব প্রয়োজন অস্বীকার করেনি। প্রয়োজনে নারীরা ঘরের বাইরে কাজ করতে পারবে। তবে শর্ত হলো—
১. কাজটি তাঁর প্রয়োজনীয় হতে হবে।
২. কাজটি নারীর স্বভাব ও প্রকৃতির অনুকূল হতে হবে।
৩. পর্দা বজায় রাখতে হবে, পুরুষের সঙ্গে নির্জনে থাকা যাবে না।
৪. কাজের কারণে শরিয়তের বিধান লঙ্ঘিত হবে না।
৫. নামাজ, পরিবার বা সন্তানের দায়িত্ব পালনে বিঘ্ন ঘটবে না।
নারীর জন্য উপযুক্ত কর্মক্ষেত্র
ফকিহ আলেমরা নারীর কর্মসংস্থানকে দুই ভাগে ভাগ করেছেন—
-
বিশেষায়িত কাজ : ধাত্রী, নারী চিকিৎসা, মেয়েদের শিক্ষা ইত্যাদি।
-
সাধারণ কাজ : কৃষি, ব্যবসা, শিল্প ইত্যাদি; তবে কেবল প্রয়োজন হলে এবং শর্তসাপেক্ষে।
আধুনিক যুগে বিকল্প কর্মসংস্থান
বর্তমান বিশ্বে মুসলিম নারীদের জন্য ঘরে বসে কাজের নানা সুযোগ তৈরি হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে—
-
ফ্রিল্যান্সিং ও অনলাইন ব্যবসা
-
অনলাইনে পাঠদান ও কর্মশালা
-
হস্ত ও কুটির শিল্প
-
আর্ট, ক্যালিগ্রাফি ও লেখালেখি
এসব কর্মসংস্থানে নারীরা শরীয়তের শর্ত মান্য করে পর্দা বজায় রেখেই স্বাবলম্বী হতে পারে।
উপসংহার
ইসলাম নারীকে বন্দি করেনি, বরং নারীর শ্রমকে সম্মানিত করেছে এবং তাদের প্রয়োজনের ক্ষেত্রেও বিকল্প পথ খুলে দিয়েছে। নারী ও পুরুষ উভয়ের দায়িত্ব সঠিকভাবে পালিত হলে তবেই সমাজ ও সভ্যতায় ভারসাম্য আসবে।