প্রকাশিত: ০৮:০৭, শনিবার, ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৫
প্রত্যেক মানুষ মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করবে এবং এই দুনিয়া থেকে চলে যেতে হবে। মৃত্যুর পর সাধারণত দেহ মাটিতে দাফন করা হয়, কিন্তু দাফনের পর মহান আল্লাহ কিভাবে তাদের সঙ্গে আচরণ করছেন, এবং তাদের কবরের জীবন কেমন যায়, তা আল্লাহ ছাড়া কেউ জানেনা।
অক্ষত মৃতদেহ: একটি রহস্য
কখনও কখনও বহুদিন পর মাটির নিচে কারো মৃতদেহ অক্ষত পাওয়া গেলে তা নিয়ে চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়। হাদিসে উল্লেখ আছে, আল্লাহর কিছু বিশেষ বান্দার মৃতদেহ তিনি মাটির জন্য হারাম করে দিয়েছেন। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, “মহান সর্বশক্তিমান আল্লাহ মাটির জন্য নবী-রাসুলগণের দেহকে হারাম করে দিয়েছেন।” (আবু দাউদ, হাদিস : ১০৪৭) অর্থাৎ নবীদের দেহ কবরেও অক্ষত থাকে এবং মাটিতে নষ্ট হয় না।
পচন এবং সংরক্ষণ
এদিকে, কবরে লাশ পচে যাওয়া পাপী হওয়ার প্রমাণ নয়। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ বলেছেন, “আমি মাটি থেকে তোমাদের সৃষ্টি করেছি, তাতেই তোমাদের ফিরিয়ে দেব এবং তা থেকে পুনর্বার তোমাদের বের করব।” (সুরা: তাহা, আয়াত: ৫৫)
বিভিন্ন সময় কিছু সাহাবায়ে কেরামের কবর কিংবা নেককার মনীষীদের মৃতদেহ অক্ষত পাওয়া যাওয়ার নজির রয়েছে। ফরেনসিক অ্যানথ্রোপলজি সেন্টারের পরিচালক ড্যানিয়েল ওয়েসকট বলেন, “মৃত্যুর কয়েক মিনিটের মধ্যেই পচনের প্রক্রিয়া শুরু হলেও এর সময়কাল নির্ভর করে পরিবেশের তাপমাত্রা, মাটির অম্লতা এবং কফিনের উপাদানের উপর।”
আল্লাহর ইচ্ছা
মহান আল্লাহ কিছু বেঈমানের মৃতদেহও অক্ষত রেখে দেন, যেমন—ফেরাউনের মৃতদেহ। কোরআনে বলা হয়েছে, “সুতরাং আজ আমি তোমার (কেবল) দেহটি বাঁচাব, যাতে তুমি তোমার পরবর্তী কালের মানুষের জন্য নিদর্শন হয়ে থাকো।” (সুরা: ইউনুস, আয়াত: ৯২)
উপসংহার
আল্লাহ ছাড়া কেউ জানে না কে জান্নাতি এবং কে জাহান্নামি। যারা আল্লাহর প্রদত্ত কোরআন-হাদিস মোতাবেক জীবন পরিচালিত করেছেন, তাঁদের মৃতদেহ অক্ষত পাওয়া গেলে তাঁদের ব্যাপারে নাজাতের আশা করা দোষণীয় নয়। তবে, কবরে কারো মৃতদেহ পচে গেলে বা অক্ষত থাকলেই তাকে নিশ্চিত করে জান্নাতি বা জাহান্নামি বানানোর বিতর্কে না জড়ানোই বুদ্ধিমানের কাজ।
মুমিনের কাজ হবে মহানবী (সা.) যতটুকু স্পষ্ট করেছেন, ততটুকু মেনে নিয়ে তাঁর নির্দেশনা মোতাবেক আমল করা।