ঢাকাWednesday , 17 September 2025
  1. অর্থনীতি
  2. আইন-আদালত
  3. আন্তর্জাতিক
  4. আবহাওয়া
  5. খেলাধুলা
  6. জাতীয়
  7. ধর্ম ও জীবন
  8. বিনোদন
  9. বিশেষ প্রতিবেদন
  10. রাজনীতি
  11. সারাদেশ
আজকের সর্বশেষ সবখবর

ইসলামী অর্থনীতিতে চাহিদা-জোগান নীতি: স্বচ্ছ বাজারব্যবস্থার নিশ্চয়তা

দৈনিক আশুলিয়া
September 17, 2025 8:58 am
Link Copied!

দৈনিক আশুলিয়া
প্রকাশ: ০৮:৫৫, বুধবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক
মানবসমাজে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের অন্যতম ভিত্তি হলো ক্রয়-বিক্রয় ও সেবা আদান-প্রদান। এ ক্ষেত্রে চাহিদা ও জোগান নীতি একটি স্বাভাবিক এবং কার্যকর প্রক্রিয়া হিসেবে কাজ করে। ইসলাম মানুষের অর্থনৈতিক জীবনকে স্বচ্ছ, ন্যায়সংগত ও ভারসাম্যমূলক করার জন্য বাজারব্যবস্থার স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে উৎসাহিত করে। কৃত্রিমভাবে দাম বাড়ানো, জবরদস্তি করে মূল্য নির্ধারণ কিংবা দালালির মাধ্যমে বাজারে অস্বাভাবিকতা সৃষ্টি করা ইসলামে কঠোরভাবে নিষিদ্ধ।

কোরআন ও হাদিসে চাহিদা ও জোগান নীতির মাধ্যমে প্রাকৃতিকভাবে বাজারদর নির্ধারণের ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। এর ফলে বাজারে যেমন স্বচ্ছতা বজায় থাকে, তেমনি রিজিকের প্রবাহও স্বাভাবিক থাকে।


চাহিদা ও জোগান নীতির প্রয়োগ

ইসলামে বাজারদর নির্ধারণে কোনো প্রকার বলপ্রয়োগ বা কৃত্রিম চাপ কাম্য নয়। বরং বাজারের স্বাভাবিক শক্তিকে—চাহিদা ও জোগান—অবাধ ও কার্যকর করার ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। কোরআনে আল্লাহ তাআলা বলেন,

“আমিই তাদের মধ্যে জীবিকা বণ্টন করি পার্থিব জীবনে এবং একজনকে অপরের ওপর মর্যাদায় উন্নীত করি, যাতে একে অপরের দ্বারা কাজ করিয়ে নিতে পারে।” (সুরা জুখরুফ : ৩২)

এ থেকেই বোঝা যায়, ক্রেতা-বিক্রেতা ও সেবাগ্রহীতা-সেবাদাতা সবাই পরস্পরের ওপর নির্ভরশীল। এই পারস্পরিক নির্ভরশীলতার ফলেই বাজারে একটি ভারসাম্যপূর্ণ মূল্য নির্ধারণ হয়।


রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর নির্দেশনা

রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর যুগে শহরবাসীদের অনেক সময় গ্রাম্য পণ্য বাজারে আসার আগেই কিনে নেওয়ার প্রবণতা ছিল। এতে বাজারে স্বাভাবিক চাহিদা-জোগানের প্রবাহ ব্যাহত হতো। এ বিষয়ে রাসুল (সা.) স্পষ্টভাবে নিষেধ করেছেন। জাবির (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন,

“শহরের লোক গ্রামের লোকের পক্ষ হয়ে বিক্রয় করবে না। মানুষদের মুক্ত ছেড়ে দাও। আল্লাহ একে অপরের মাধ্যমে রিজিক প্রদান করেন।” (মুসলিম, হাদিস : ১৫২২)

অর্থাৎ ক্রেতা ও বিক্রেতার মধ্যে তৃতীয় পক্ষের হস্তক্ষেপ নিষিদ্ধ করা হয়েছে, যাতে বাজারদর স্বাভাবিক থাকে এবং কেউ অন্যায় সুবিধা নিতে না পারে।


রাষ্ট্রীয়ভাবে মূল্য নির্ধারণ না করা

রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর যুগে একবার দ্রব্যমূল্য বেড়ে গেলে মানুষ মূল্য বেঁধে দেওয়ার অনুরোধ করে। কিন্তু তিনি বলেন,

“আল্লাহই মূল্য নির্ধারণকারী, তিনিই জোগান বাড়ান ও কমান এবং রিজিক প্রদান করেন।” (তিরমিজি, হাদিস : ১৩১৪)

এটি প্রমাণ করে যে কৃত্রিমভাবে দাম নির্ধারণ করা ইসলামী অর্থনীতির নীতির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়।


উপসংহার

ইসলামী অর্থনীতি চায় বাজারে স্বচ্ছতা, ন্যায়বিচার এবং প্রাকৃতিক প্রবাহ বজায় থাকুক। কৃত্রিম হস্তক্ষেপ বা রাষ্ট্রীয় জবরদস্তি এ ব্যবস্থাকে ব্যাহত করে। তাই চাহিদা ও জোগানের নীতি ইসলামী অর্থনীতিতে ভারসাম্যপূর্ণ বাজারদর এবং ন্যায়সংগত লেনদেন নিশ্চিত করার একটি মৌলিক ভিত্তি হিসেবে কাজ করে।