আন্তর্জাতিক ডেস্ক | টোকিও, জাপান
জাপানে এক ট্যাক্সিচালকের বিরুদ্ধে নারী যাত্রীদের মাদক খাইয়ে ধর্ষণ এবং সেই অপরাধ গোপনে ভিডিও ধারণের ভয়াবহ অভিযোগ উঠেছে। টোকিও মহানগর পুলিশের অভিযানে অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তদন্তে জানা গেছে, তার বিরুদ্ধে প্রায় ৫০ জন নারীকে ধর্ষণের অভিযোগ রয়েছে।
অভিযুক্তের বাসা ও গাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে পুলিশ ৩ হাজারেরও বেশি ছবি ও ভিডিও উদ্ধার করেছে, যেগুলোর বেশিরভাগই গোপনে ধারণ করা এবং আপত্তিকর দৃশ্য সম্বলিত।
পুলিশ জানায়, অভিযুক্ত ব্যক্তি পেশায় একজন ট্যাক্সিচালক হলেও দীর্ঘদিন ধরেই সে এই অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড চালিয়ে আসছিল। সে মূলত রাতের বেলায় একা ভ্রমণকারী নারী যাত্রীদের টার্গেট করত।
তাদের প্রথমে ট্যাক্সিতে তুলেই নেশাজনক পানীয় বা খাবারের মাধ্যমে অজ্ঞান করে ফেলে ধর্ষণ করত। এরপর সেই ঘটনা গোপনে ভিডিও ধারণ করত এবং কখনও কখনও ব্ল্যাকমেইলের জন্যও তা ব্যবহার করত বলে অভিযোগ রয়েছে।
গ্রেপ্তারের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে অভিযুক্ত ব্যক্তি কিছু অপরাধের বিষয় স্বীকার করেছে। তবে পুলিশ বলছে, তদন্তে তার অপরাধের পরিসর আরও ব্যাপক ও ভয়ঙ্কর রূপ ধারণ করছে।
টোকিও মেট্রোপলিটন পুলিশের মুখপাত্র এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন—
"আমরা এখন পর্যন্ত প্রাপ্ত তথ্য ও উদ্ধারকৃত আলামতের ভিত্তিতে ৫০ জনেরও বেশি নারীর ওপর সংঘটিত যৌন সহিংসতার প্রমাণ পেয়েছি। এই অপরাধ পরিকল্পিত, ধারাবাহিক এবং ভয়াবহ মাত্রার। অভিযুক্তের মোবাইল, ল্যাপটপ ও অন্যান্য ডিভাইস থেকে ৩ হাজারেরও বেশি আপত্তিকর কনটেন্ট উদ্ধার করা হয়েছে।"
ঘটনাটি প্রকাশ্যে আসার পর পুরো জাপানজুড়ে নিন্দার ঝড় বইছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানাচ্ছেন সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে নারী অধিকারকর্মীরা।
"এমন একটি ঘটনায় নারীর নিরাপত্তা নিয়ে গভীর উদ্বেগ তৈরি হয়েছে," মন্তব্য করেছেন নারী অধিকার সংগঠন ‘সেফ জার্নি’–র মুখপাত্র রেইনা কাওয়াসাকি।
জাপানের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা ও আইনমন্ত্রী ইয়োশিহিদে তাকেশি এক বিবৃতিতে বলেন—
"এমন অপরাধ আমাদের সমাজে অনুচিত এবং এটি আমরা কোনোভাবেই বরদাশত করবো না। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে সর্বোচ্চ কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।"
তিনি আরও জানান, নারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পরিবহন খাতে বিশেষ নজরদারি বাড়ানো হবে এবং গোপন ক্যামেরা বা নেশাদ্রব্য ব্যবহারের বিরুদ্ধে কঠোর আইন প্রণয়ন করা হবে।
বিশ্লেষণ:
"এই ঘটনার পর জাপানের সমাজে নারীর নিরাপত্তা ও ব্যক্তিগত গোপনীয়তা রক্ষায় নতুন করে আইন সংস্কারের দাবি জোরালো হয়েছে," মন্তব্য করেছেন টোকিও বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাধবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক কিনিচি ইয়ামামোতো।
প্রকাশক ও সম্পাদকঃ এস এম নজরুল ইসলাম অফিসঃ ৫৬/৫৭ শরীফ ম্যানশন(৪র্থ তলা) মতিঝিল কমার্সিয়াল এলাকা,ঢাকা-১০০০ মোবাইলঃ ০১৭১৪-৩৪০৪১৭ ইমেইলঃkazialamin577@gmail@gmail.com
Copyright © 2025 দৈনিক আশুলিয়া. All rights reserved.