📍 ধর্ম বিষয়ক প্রতিবেদক
পবিত্র হজ ইসলামের অন্যতম প্রধান স্তম্ভ। প্রতি বছর বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে লাখ লাখ মুসলমান সৌদি আরবে গিয়ে হজ পালন করেন। এই বিশ্বব্যাপী ধর্মীয় আনুষ্ঠানিকতাকে কেন্দ্র করে সৌদি সরকার একটি সুনির্দিষ্ট কোটানীতি অনুসরণ করে থাকে, যার আওতায় প্রতিটি দেশ থেকে নির্ধারিতসংখ্যক হজযাত্রী পবিত্র ভূমিতে যাওয়ার অনুমতি পান।
বিশ্বব্যাপী হজযাত্রীর সংখ্যা দিন দিন বেড়ে চললেও মক্কা ও মদিনার অবকাঠামো ও নিরাপত্তা ব্যবস্থাপনার সীমাবদ্ধতা থাকায় সৌদি সরকার বাধ্য হয়েই একটি হিসাব-নির্ভর কোটাব্যবস্থা অনুসরণ করে। এই কোটানীতির মূল উদ্দেশ্য হলো— সুষ্ঠুভাবে হজ ব্যবস্থাপনা পরিচালনা করা এবং হজযাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।
সাধারণত প্রতি ১ হাজার জন মুসলমান নাগরিকের বিপরীতে ১ জন করে হজ করার অনুমতি পায় একটি দেশ। তবে এই সংখ্যা মাঝে মাঝে পরিবর্তিত হয় আন্তর্জাতিক পরিস্থিতি, মহামারি, অবকাঠামো উন্নয়ন ও নিরাপত্তাজনিত কারণে।
বাংলাদেশ থেকে প্রতিবছর গড়ে ১ লাখ ২০ হাজার থেকে ১ লাখ ২৭ হাজার হজযাত্রী হজে যাওয়ার অনুমতি পান। ধর্ম মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে এই সংখ্যা নির্ধারিত হয় এবং সরকারি ও বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় হজযাত্রীদের নিবন্ধন ও প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়।
ধর্ম মন্ত্রণালয়ের হজ উইং সূত্রে জানা গেছে,
“২০২৫ সালে বাংলাদেশ থেকে মোট ১ লাখ ২৫ হাজার হজযাত্রী সৌদি আরবে যাওয়ার সুযোগ পাচ্ছেন। এর মধ্যে ১০ হাজার হজযাত্রী সরকারি ব্যবস্থাপনায় এবং বাকি ১ লাখ ১৫ হাজার যাবেন বেসরকারি হজ এজেন্সিগুলোর মাধ্যমে।”
নির্ধারিত কোটার মধ্যে হজে যেতে ইচ্ছুক মুসল্লিদের নির্ধারিত সময়ের মধ্যে অনলাইনে নিবন্ধন করতে হয়। নিবন্ধনের পর প্রত্যেক হজযাত্রীকে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করতে হয়, যাতে তারা হজের আনুষ্ঠানিকতা, নিয়মনীতি ও করণীয় সম্পর্কে সম্যক ধারণা লাভ করতে পারেন।
বাংলাদেশ ও সৌদি সরকারের মধ্যে চুক্তি অনুযায়ী, হজযাত্রীদের জন্য বিশেষ বিমান চলাচল, আবাসন, স্বাস্থ্যসেবা ও খাদ্য ব্যবস্থাপনার ব্যবস্থা রাখা হয়। হজমৌসুমে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স ও সৌদি এয়ারলাইন্স বিশেষ হজ ফ্লাইট পরিচালনা করে থাকে।
শুধু বাংলাদেশ নয়, ভারত, ইন্দোনেশিয়া, পাকিস্তান, তুরস্ক, মিশর, মালয়েশিয়াসহ প্রতিটি মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশই সৌদি আরবের কাছ থেকে নির্দিষ্ট সংখ্যক হজ কোটা বরাদ্দ পেয়ে থাকে।
সৌদি হজ মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানায়,
“আন্তর্জাতিক মুসলিম সমাজের নিরাপদ ও সুন্দর হজ পালনের জন্য কোটাব্যবস্থা ছাড়া বিকল্প নেই। প্রতিটি দেশকে তাদের নাগরিকদের নিবন্ধন ও প্রশিক্ষণের বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে নিশ্চিত করতে হবে।”
📌 উপসংহার:
পবিত্র হজ ইসলামের এক মহান বিধান। হজ ব্যবস্থাপনার কোটানীতি শুধু একটি পরিসংখ্যান নয়, এটি একটি সুপরিকল্পিত ব্যবস্থা যা মুসলমানদের নিরাপদ ও সুশৃঙ্খল হজ পালনের জন্য অপরিহার্য। সরকারের যথাযথ সমন্বয়, হজ এজেন্সিগুলোর স্বচ্ছতা এবং হজযাত্রীদের সচেতনতা— এ তিনটি মিলেই সম্ভব একটি সফল হজ মৌসুম।
প্রকাশক ও সম্পাদকঃ এস এম নজরুল ইসলাম অফিসঃ ৫৬/৫৭ শরীফ ম্যানশন(৪র্থ তলা) মতিঝিল কমার্সিয়াল এলাকা,ঢাকা-১০০০ মোবাইলঃ ০১৭১৪-৩৪০৪১৭ ইমেইলঃkazialamin577@gmail@gmail.com
Copyright © 2025 দৈনিক আশুলিয়া. All rights reserved.