নিজস্ব প্রতিবেদক:
দেশের বর্তমান রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা ও প্রশাসনিক জটিলতার প্রেক্ষাপটে সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামানের সময়োপযোগী মন্তব্যে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছে দেশের প্রধান রাজনৈতিক দলগুলো। বুধবার রাজধানীর সেনানিবাসে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে সেনাপ্রধান বলেন, “ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন হওয়া উচিত। কেবল একটি নির্বাচিত সরকারই দেশের গতিপথ নির্ধারণ করবে; এমন প্রশাসন নয়, যারা জনগণের কাছে দায়বদ্ধ নয় বা জবাবদিহি করতে ইচ্ছুক নয়।”
এই বক্তব্যকে “দিশানির্দেশক ও সাহসী পদক্ষেপ” হিসেবে আখ্যা দিয়েছে দেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক মহল। তারা বলছে, সেনাপ্রধানের এমন অবস্থান নির্বাচন নিয়ে চলমান ‘অস্পষ্টতা’ কাটাতে সহায়ক হবে এবং রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার জন্য এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ বার্তা।
বিপ্লবী গণতান্ত্রিক পার্টির চেয়ারম্যান মাহমুদ হোসেন বলেন, “এই বক্তব্যে আমরা আশার আলো দেখতে পাচ্ছি। রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে এটি একটি সময়োপযোগী বার্তা। নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করা ছাড়া এই সংকট থেকে উত্তরণ সম্ভব নয়।”
গণতান্ত্রিক ঐক্য ফ্রন্টের মুখপাত্র সাবিনা রহমান বলেন, “সেনাবাহিনী কখনোই রাজনীতিতে হস্তক্ষেপ করেনি এবং এ বক্তব্যও স্পষ্টতই সংবিধান ও গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার প্রতি শ্রদ্ধার প্রকাশ। এতে বোঝা যাচ্ছে, জাতীয় স্বার্থে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচনই এখন সবচেয়ে জরুরি।”
রাজনৈতিক বিশ্লেষক অধ্যাপক আবদুল কাইয়ুম বলেন, “সেনাপ্রধানের বক্তব্যটি কৌশলী এবং যথাযথ। তিনি প্রশাসনের সীমাবদ্ধতা তুলে ধরার পাশাপাশি গণতান্ত্রিক চর্চার প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্ব দিয়েছেন। এটি একটি ইনস্টিটিউশনাল ব্যালেন্সের ইঙ্গিত।”
প্রসঙ্গত, দেশের বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের কার্যক্রম নিয়ে বিভিন্নমুখী সমালোচনা চলমান। অনেকেই বলছেন, প্রশাসনে গণতান্ত্রিক জবাবদিহিতার অভাব স্পষ্ট। এরই প্রেক্ষিতে সেনাপ্রধানের এমন বক্তব্য রাজনৈতিক ভারসাম্য রক্ষায় একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
এদিকে, সেনাপ্রধানের বক্তব্যের পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও ব্যাপক আলোচনা শুরু হয়েছে। অনেকেই মন্তব্য করছেন, “দেশে সুশাসন ফিরিয়ে আনার জন্য এই বক্তব্য একটি গুরুত্বপূর্ণ বাঁক।”
সরকারের পক্ষ থেকে এখনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া না এলেও একটি দায়িত্বশীল সূত্র জানিয়েছে, “নির্বাচন কমিশনসহ সংশ্লিষ্ট সব প্রতিষ্ঠান একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে।”