নিজস্ব প্রতিবেদক
ঢাকা, মঙ্গলবার
আগামী জাতীয় নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট দিনক্ষণ ও অন্তর্বর্তী সরকারের রূপরেখা ঘোষণার জন্য জুন-জুলাই পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়েছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)। এই সময়সীমার মধ্যে সরকারের পক্ষ থেকে কোনো রোডম্যাপ না এলে কঠোর আন্দোলনে নামার ঘোষণা দিয়েছে দলটি।
বিএনপি’র সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম স্থায়ী কমিটির এক গোপন বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে বলে একাধিক নির্ভরযোগ্য সূত্র নিশ্চিত করেছে বাংলাদেশ প্রতিদিনকে। গত সোমবার রাতে বিএনপি চেয়ারপারসনের গুলশান কার্যালয়ে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এতে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান যুক্তরাজ্য থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত ছিলেন বলে জানা গেছে।
বৈঠকে নেতারা মনে করেন, দেশে যে ধরনের রাজনৈতিক অচলাবস্থা বিরাজ করছে, তা কাটিয়ে উঠতে হলে নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকারের অধীনেই নির্বাচন অনিবার্য। নেতারা আরো বলেন, বর্তমান সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হবে না—এই বিষয়ে দলের অবস্থান স্পষ্ট এবং আগের আন্দোলনেও এ দাবি ছিল মূল কেন্দ্রে।
স্থায়ী কমিটির এক সদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, “আমরা সরকারকে সময় দিচ্ছি জুন-জুলাই পর্যন্ত। এর মধ্যে নির্বাচনের নির্দিষ্ট রোডম্যাপসহ একটি অন্তর্বর্তী সরকারের রূপরেখা দিতে হবে। তা না হলে আমরা রাজপথে কঠোর কর্মসূচিতে যাব।”
তিনি আরও জানান, দলের grassroots পর্যায়ে প্রস্তুতি নিতে ইতিমধ্যে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। মাঠপর্যায়ের নেতা-কর্মীদেরও সাংগঠনিকভাবে সক্রিয় করা হচ্ছে। প্রয়োজনে টানা অবরোধ, হরতাল ও বৃহৎ সমাবেশের মতো কর্মসূচি দেওয়া হতে পারে বলে ইঙ্গিত দেন তিনি।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, বিএনপি এখনই কোন ধরনের সশস্ত্র বা সংঘাতমূলক পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে চায় না। তবে রাজনৈতিক চাপ সৃষ্টি করে সরকারকে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনে বাধ্য করতে চায় তারা।
এদিকে আওয়ামী লীগ সরকারের শীর্ষ পর্যায় থেকে এখন পর্যন্ত এ বিষয়ে কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। তবে ক্ষমতাসীন দল আগেও বারবার জানিয়েছে, বর্তমান সংবিধানের বাইরে গিয়ে কোনো সরকার গঠন সম্ভব নয়।
বিশ্লেষকদের মতে, দেশের রাজনীতিতে ফের উত্তাপ ছড়ানোর ইঙ্গিত স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। আগামী কয়েক মাসে রাজপথ উত্তপ্ত হওয়ার আশঙ্কা করছেন অনেকে।