ঢাকাSaturday , 9 August 2025
  1. অর্থনীতি
  2. আইন-আদালত
  3. আন্তর্জাতিক
  4. আবহাওয়া
  5. খেলাধুলা
  6. জাতীয়
  7. ধর্ম ও জীবন
  8. বিনোদন
  9. বিশেষ প্রতিবেদন
  10. রাজনীতি
  11. সারাদেশ
আজকের সর্বশেষ সবখবর

ক্রাইম জোনে পরিণত গাজীপুর

বার্তা কক্ষ
August 9, 2025 8:58 am
Link Copied!

📰 দৈনিক আশুলিয়া
📅 শনিবার, ৯ আগস্ট ২০২৫
🔍 জাতীয় | অপরাধ | গাজীপুর বিশেষ প্রতিবেদন

খুন, চুরি, ছিনতাই, ডাকাতি ও চাঁদাবাজিতে আতঙ্কিত নগরবাসী

নিজস্ব প্রতিবেদক:
গাজীপুর এখন যেন অপরাধের অভয়ারণ্য। প্রতিদিনই কোথাও না কোথাও খুন, চুরি, ছিনতাই, ডাকাতি কিংবা চাঁদাবাজির ঘটনা ঘটছে। শুধু রাত নয়—দিনের আলোতেও বেপরোয়া হয়ে উঠেছে দুর্বৃত্তরা। এসব ঘটনায় আতঙ্কে দিন কাটছে সাধারণ মানুষের।

গতকাল শুক্রবার সকালে গাজীপুরের টঙ্গী স্টেশন রোড থেকে দুটি ট্রাভেল ব্যাগের ভেতরে কালো পলিথিনে মোড়ানো এক ব্যক্তির মাথাবিহীন লাশের আট টুকরো উদ্ধার করে পুলিশ। পরে পিবিআই ও সিআইডি আঙুলের ছাপ বিশ্লেষণ করে নিহতের পরিচয় শনাক্ত করে। তিনি নরসিংদী সদর উপজেলার কমিরপুর গ্রামের সুরুজ মিয়ার ছেলে মো. অলি মিয়া (৩৭), পেশায় আজমেরী পরিবহনের হেলপার। তবে তাঁর মাথা এখনো নিখোঁজ। পুলিশের ধারণা, দুই দিন আগে অলিকে হত্যা করে ব্যাগে ভরে রাতের আঁধারে ঘটনাস্থলে ফেলে যায় খুনিরা।

এর মাত্র কয়েক ঘণ্টা আগে, বৃহস্পতিবার রাতে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের ব্যস্ততম চান্দনা চৌরাস্তা এলাকায় প্রকাশ্যে কুপিয়ে ও গলা কেটে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয় সাংবাদিক আসাদুজ্জামান তুহিনকে (৩২)। নিহতের বড় ভাই মো. সেলিম বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে জিএমপির বাসন থানায় মামলা করেছেন। পুলিশের প্রাথমিক ধারণা, স্থানীয় ছিনতাইকারীদের একটি গ্রুপের কর্মকাণ্ড ভিডিও ধারণ করায় ক্ষিপ্ত হয়ে এ হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে। ইতোমধ্যে সন্দেহভাজন পাঁচজনকে আটক করেছে পুলিশ, যাদের মধ্যে কেটু মিজান, তার স্ত্রী গোলাপি, আলামিন ও স্বাধীন রয়েছে।

হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে শুক্রবার সকালে গাজীপুর প্রেস ক্লাবের সামনে মানববন্ধন করেন স্থানীয় সংবাদকর্মীরা। সাংবাদিক ইউনিয়ন গাজীপুরের সভাপতি দেলোয়ার হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত কর্মসূচিতে প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার প্রতিনিধিরা অংশ নেন। নিহত তুহিন ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়া উপজেলার ভাটিপাড়া গ্রামের বাসিন্দা ছিলেন এবং দৈনিক প্রতিদিনের কাগজের স্টাফ রিপোর্টার হিসেবে কর্মরত ছিলেন।

অপরাধের তালিকায় আরেকটি ঘটনা যুক্ত হয় বুধবার বিকেলে। গাজীপুর সদর থানার কাছে প্রকাশ্যে সাংবাদিক আনোয়ার হোসেন সৌরভকে টেনেহিঁচড়ে নিয়ে পিটিয়ে ও ইট দিয়ে পা থেঁতলে দেয় দুর্বৃত্তরা। এ সময় আনোয়ার বারবার প্রাণ ভিক্ষা চাইলেও রেহাই পাননি। ঘটনাটি ভিডিওতে ধারণ হয়ে সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এ ঘটনায় তাঁর মা আনোয়ারা বেগম বাদী হয়ে ৩ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ১৫–২০ জনকে আসামি করে মামলা করেন। প্রধান আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

একই দিন রাতে ভবানীপুর এলাকায় এক ডেকোরেটর ব্যবসায়ীর লাশ উদ্ধার করে জয়দেবপুর থানা পুলিশ। পরিবারের দাবি, তাকে হত্যা করে মোটরসাইকেলসহ ঘটনাস্থলে ফেলে গেছে দুর্বৃত্তরা।

র‌্যাব-১-এর অধিনায়ক লে. কর্নেল আশিকুর রহমান বলেন, “গাজীপুরের অপরাধ নিয়ন্ত্রণে র‌্যাব নিয়মিত চেকপোস্ট, প্যাট্রলিং এবং গোয়েন্দা নজরদারি চালাচ্ছে। বিশেষ করে সাংবাদিক তুহিন হত্যায় জড়িতদের ধরতে একাধিক টিম কাজ করছে।”

গাজীপুর জেলা পুলিশ সুপার ড. চৌধুরী মো. যাবের সাদেক জানান, “গাজীপুরে যোগদানের পর থেকে এখন পর্যন্ত কোনো অপরাধের রহস্য অমীমাংসিত থাকেনি। খুন, চাঁদাবাজি ও মাদককেন্দ্রিক অপরাধ নিয়ন্ত্রণে পুলিশ সর্বদা সজাগ।”

তবে বাস্তবতা বলছে, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তৎপরতার পরও শহরবাসীকে এখনও অপরাধের ভয়ে তটস্থ থাকতে হচ্ছে। গাজীপুর যেন এখন এক অঘোষিত ক্রাইম জোন—যেখানে জীবন রক্ষাই মানুষের প্রধান চিন্তা।

খুন, চুরি, ছিনতাই, ডাকাতি ও চাঁদাবাজিতে আতঙ্কিত নগরবাসী

নিজস্ব প্রতিবেদক:
গাজীপুর এখন যেন অপরাধের অভয়ারণ্য। প্রতিদিনই কোথাও না কোথাও খুন, চুরি, ছিনতাই, ডাকাতি কিংবা চাঁদাবাজির ঘটনা ঘটছে। শুধু রাত নয়—দিনের আলোতেও বেপরোয়া হয়ে উঠেছে দুর্বৃত্তরা। এসব ঘটনায় আতঙ্কে দিন কাটছে সাধারণ মানুষের।

গতকাল শুক্রবার সকালে গাজীপুরের টঙ্গী স্টেশন রোড থেকে দুটি ট্রাভেল ব্যাগের ভেতরে কালো পলিথিনে মোড়ানো এক ব্যক্তির মাথাবিহীন লাশের আট টুকরো উদ্ধার করে পুলিশ। পরে পিবিআই ও সিআইডি আঙুলের ছাপ বিশ্লেষণ করে নিহতের পরিচয় শনাক্ত করে। তিনি নরসিংদী সদর উপজেলার কমিরপুর গ্রামের সুরুজ মিয়ার ছেলে মো. অলি মিয়া (৩৭), পেশায় আজমেরী পরিবহনের হেলপার। তবে তাঁর মাথা এখনো নিখোঁজ। পুলিশের ধারণা, দুই দিন আগে অলিকে হত্যা করে ব্যাগে ভরে রাতের আঁধারে ঘটনাস্থলে ফেলে যায় খুনিরা।

এর মাত্র কয়েক ঘণ্টা আগে, বৃহস্পতিবার রাতে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের ব্যস্ততম চান্দনা চৌরাস্তা এলাকায় প্রকাশ্যে কুপিয়ে ও গলা কেটে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয় সাংবাদিক আসাদুজ্জামান তুহিনকে (৩২)। নিহতের বড় ভাই মো. সেলিম বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে জিএমপির বাসন থানায় মামলা করেছেন। পুলিশের প্রাথমিক ধারণা, স্থানীয় ছিনতাইকারীদের একটি গ্রুপের কর্মকাণ্ড ভিডিও ধারণ করায় ক্ষিপ্ত হয়ে এ হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে। ইতোমধ্যে সন্দেহভাজন পাঁচজনকে আটক করেছে পুলিশ, যাদের মধ্যে কেটু মিজান, তার স্ত্রী গোলাপি, আলামিন ও স্বাধীন রয়েছে।

হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে শুক্রবার সকালে গাজীপুর প্রেস ক্লাবের সামনে মানববন্ধন করেন স্থানীয় সংবাদকর্মীরা। সাংবাদিক ইউনিয়ন গাজীপুরের সভাপতি দেলোয়ার হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত কর্মসূচিতে প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার প্রতিনিধিরা অংশ নেন। নিহত তুহিন ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়া উপজেলার ভাটিপাড়া গ্রামের বাসিন্দা ছিলেন এবং দৈনিক প্রতিদিনের কাগজের স্টাফ রিপোর্টার হিসেবে কর্মরত ছিলেন।

অপরাধের তালিকায় আরেকটি ঘটনা যুক্ত হয় বুধবার বিকেলে। গাজীপুর সদর থানার কাছে প্রকাশ্যে সাংবাদিক আনোয়ার হোসেন সৌরভকে টেনেহিঁচড়ে নিয়ে পিটিয়ে ও ইট দিয়ে পা থেঁতলে দেয় দুর্বৃত্তরা। এ সময় আনোয়ার বারবার প্রাণ ভিক্ষা চাইলেও রেহাই পাননি। ঘটনাটি ভিডিওতে ধারণ হয়ে সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এ ঘটনায় তাঁর মা আনোয়ারা বেগম বাদী হয়ে ৩ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ১৫–২০ জনকে আসামি করে মামলা করেন। প্রধান আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

একই দিন রাতে ভবানীপুর এলাকায় এক ডেকোরেটর ব্যবসায়ীর লাশ উদ্ধার করে জয়দেবপুর থানা পুলিশ। পরিবারের দাবি, তাকে হত্যা করে মোটরসাইকেলসহ ঘটনাস্থলে ফেলে গেছে দুর্বৃত্তরা।

র‌্যাব-১-এর অধিনায়ক লে. কর্নেল আশিকুর রহমান বলেন, “গাজীপুরের অপরাধ নিয়ন্ত্রণে র‌্যাব নিয়মিত চেকপোস্ট, প্যাট্রলিং এবং গোয়েন্দা নজরদারি চালাচ্ছে। বিশেষ করে সাংবাদিক তুহিন হত্যায় জড়িতদের ধরতে একাধিক টিম কাজ করছে।”

গাজীপুর জেলা পুলিশ সুপার ড. চৌধুরী মো. যাবের সাদেক জানান, “গাজীপুরে যোগদানের পর থেকে এখন পর্যন্ত কোনো অপরাধের রহস্য অমীমাংসিত থাকেনি। খুন, চাঁদাবাজি ও মাদককেন্দ্রিক অপরাধ নিয়ন্ত্রণে পুলিশ সর্বদা সজাগ।”

তবে বাস্তবতা বলছে, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তৎপরতার পরও শহরবাসীকে এখনও অপরাধের ভয়ে তটস্থ থাকতে হচ্ছে। গাজীপুর যেন এখন এক অঘোষিত ক্রাইম জোন—যেখানে জীবন রক্ষাই মানুষের প্রধান চিন্তা।