📰 দৈনিক আশুলিয়া – www.dainikashulia.com
📅 শনিবার, ৯ আগস্ট ২০২৫
🔍 জাতীয় | অপরাধ | গাজীপুর বিশেষ প্রতিবেদন
গাজীপুর, তুরাগ ও হোতাপাড়া থেকে একযোগে অভিযান
নিজস্ব প্রতিবেদক:
গাজীপুরে দৈনিক প্রতিদিনের কাগজ–এর স্টাফ রিপোর্টার মো. আসাদুজ্জামান তুহিনকে (৩২) প্রকাশ্যে কুপিয়ে ও গলা কেটে হত্যার ঘটনায় চারজনকে গ্রেফতার করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। হত্যাকাণ্ডের মাত্র ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই এদের আটক করা হয়।
গ্রেফতারকৃতদের পরিচয় ও গ্রেফতারের স্থান
শুক্রবার রাতে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ (জিএমপি) এক সংবাদ সম্মেলনে জানায়, গ্রেফতাররা হলেন—
-
ফয়সাল ওরফে কেটু মিজান (সালনা, গাজীপুর)
-
গোলাপী (কেটু মিজানের স্ত্রী)
-
আল আমিন (উত্তরা তুরাগ, ঢাকা)
-
স্বাধীন (হোতাপাড়া, গাজীপুর সদর)
জিএমপির গোয়েন্দা দক্ষিণ বিভাগের একটি টিম গাজীপুরের সালনা এলাকা থেকে কেটু মিজান ও গোলাপীকে আটক করে। বাসন থানা পুলিশ রাজধানীর তুরাগ এলাকা থেকে আল আমিনকে গ্রেফতার করে। অন্যদিকে র্যাব গাজীপুরের হোতাপাড়া এলাকা থেকে স্বাধীনকে আটক করে।
ঘটনার পটভূমি
বৃহস্পতিবার রাতে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের ব্যস্ততম চান্দনা চৌরাস্তা এলাকায় নৃশংসভাবে হত্যাকাণ্ডের শিকার হন সাংবাদিক তুহিন। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, দুর্বৃত্তরা তাকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে ও গলা কেটে পালিয়ে যায়। রক্তাক্ত অবস্থায় স্থানীয়রা হাসপাতালে নিলেও চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
পুলিশের প্রাথমিক ধারণা, স্থানীয় ছিনতাইকারীদের একটি গ্রুপের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড ভিডিওতে ধারণ করায় ক্ষিপ্ত হয়ে তাকে হত্যা করা হয়। নিহত তুহিন ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়া উপজেলার ভাটিপাড়া গ্রামের বাসিন্দা এবং দীর্ঘদিন ধরে গাজীপুরে সাংবাদিকতা করছিলেন।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বক্তব্য
জিএমপি উপ–পুলিশ কমিশনার (অপরাধ–উত্তর) মো. রবিউল হাসান সংবাদ সম্মেলনে বলেন—
“আমরা হত্যাকাণ্ডের পরপরই ঘটনাস্থলের আশপাশের সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করি। সেখানে কয়েকজনকে চিহ্নিত করা হয়। এরপর একযোগে অভিযান চালিয়ে তাদের বিভিন্ন এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃতরা এ হত্যাকাণ্ডে সরাসরি অংশ নেয়।”
তিনি আরও জানান, তদন্তে হত্যার পেছনের প্রকৃত কারণ ও পরিকল্পনাকারীদের খুঁজে বের করা হবে।
সাংবাদিক সমাজের প্রতিবাদ
শুক্রবার সকালে গাজীপুর প্রেস ক্লাবের সামনে সাংবাদিক ইউনিয়ন গাজীপুরের উদ্যোগে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। সংগঠনের সভাপতি দেলোয়ার হোসেন বলেন—
“এটি শুধু একজন সাংবাদিকের উপর নয়, পুরো সাংবাদিক সমাজের উপর হামলা। হত্যাকারীদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাব।”
নিহতের পরিবারের শোক ও দাবি
নিহত তুহিনের বড় ভাই মো. সেলিম বলেন—
“আমার ভাই কেন খুন হলো, আমরা জানি না। তার স্ত্রী ও দুই ছেলে এখন অনাথ হয়ে গেল। আমি দ্রুত হত্যাকারীদের শাস্তি চাই।”
তুহিনের স্ত্রী ফরিদা আক্তার এবং দুই ছোট ছেলে তৌকি (৫) ও ফাহিম (২) শোকে মুহ্যমান।