স্টাফ রিপোর্টার | ঢাকা | ০৫ মে ২০২৫
দেশের বর্ষীয়ান আইনজীবী ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাকের মৃত্যুতে শোকস্তব্ধ সুপ্রিম কোর্ট অঙ্গন। তার প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে সোমবার সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ ও হাইকোর্ট বিভাগে আধাবেলা বিচারিক কার্যক্রম স্থগিত রাখা হয়েছে।
রবিবার (৪ মে) বিকেলে ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক রাজধানীর একটি হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন (ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭৬ বছর।
সোমবার সকাল ১১টায় সুপ্রিম কোর্টের ইনার গার্ডেন প্রাঙ্গণে তার নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এতে আইনজীবী, বিচারপতি, রাজনীতিবিদ, সহকর্মী ও শুভানুধ্যায়ীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ অংশ নেন।
সুপ্রিম কোর্টের শোকবার্তা ও কার্যক্রম স্থগিত ঘোষণা
সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন এক বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, মরহুম ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাকের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে আপিল বিভাগের বিচারিক কার্যক্রম চলবে সকাল ১১টা পর্যন্ত এবং হাইকোর্ট বিভাগের বিচারিক কার্যক্রম চলবে দুপুর ১টা ১৫ মিনিট পর্যন্ত। এরপর উভয় বিভাগের কার্যক্রম বন্ধ থাকবে।
এক প্রজ্ঞাবান আইনজ্ঞের জীবনযাত্রা
ব্যারিস্টার রাজ্জাক ছিলেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের অন্যতম প্রধান আইনজীবী। জামায়াতে ইসলামীর হয়ে তিনি দীর্ঘদিন মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলাগুলোর আইনি লড়াইয়ে অংশ নেন। সেই সময় অনেক জটিল ও সংবেদনশীল মামলায় তিনি দৃঢ় যুক্তি ও শৈল্পিক দক্ষতার মাধ্যমে আদালতে উপস্থিত হন।
তিনি লন্ডনের লিঙ্কনস ইন থেকে বার-অ্যাট-ল অর্জন করেন এবং দেশে ফিরে উচ্চ আদালতে আইন পেশায় যুক্ত হন। পেশাগত জীবনে তিনি ছিলেন সততা, দক্ষতা ও নীতির প্রতীক।
সহকর্মীদের স্মৃতিচারণ
সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী বলেন, “রাজ্জাক ভাই ছিলেন শুধু একজন আইনজীবী নন, তিনি ছিলেন আমাদের বুদ্ধিবৃত্তিক বাতিঘর। তার অনুপস্থিতি অপূরণীয় ক্ষতি।”
সিনিয়র আইনজীবী ব্যারিস্টার মইনুল হোসেন বলেন, “আইন পেশায় যুক্ত থাকা অবস্থায় তিনি রাজনৈতিক চাপে কখনো মাথা নত করেননি। যুক্তির ভিত্তিতে আদালতে কথা বলতেন। তরুণ আইনজীবীদের জন্য তিনি ছিলেন আদর্শ।”
দেশব্যাপী শোক
তার মৃত্যুতে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, প্রধান বিচারপতি ও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের পক্ষ থেকে শোকবার্তা পাঠানো হয়েছে।
উল্লেখযোগ্য মামলা:
-
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের একাধিক মামলায় আসামিপক্ষের প্রধান আইনজীবী।
-
ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের অধিকার বিষয়ে হাইকোর্টে একাধিক রিট।
-
বাকস্বাধীনতা ও গণমাধ্যম স্বাধীনতা সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ মামলায় সক্রিয় অংশগ্রহণ।