নিজস্ব প্রতিবেদক:
দুই প্রতিবেশী রাষ্ট্রের মধ্যে চলমান উত্তেজনা, কূটনৈতিক সংকট এবং সামরিক প্রস্তুতির প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশসহ গোটা অঞ্চলে দেখা দিয়েছে উদ্বেগ ও অস্পষ্টতা। বিশেষত বাংলাদেশের মুসলিম সমাজের মধ্যে বিষয়টি নিয়ে গঠিত হয়েছে দ্বিধা, আবেগ ও মতানৈক্য। এমন এক সময়ে ইসলামের সুস্পষ্ট ন্যায়নীতির আলোকে এই সংকট মোকাবেলার আহ্বান জানিয়েছেন ইসলামি চিন্তাবিদ ও আলেমরা।
ইসলামের অবস্থান এখানে একদম পরিষ্কার—যুদ্ধ নয়, শান্তি; সংঘাত নয়, সন্ধি। কুরআন ও হাদিসের আলোকে ইসলাম সব সময় ন্যায়ভিত্তিক শান্তিপূর্ণ সমাধানকে প্রাধান্য দিয়েছে।
আল কুরআনে ইরশাদ হয়েছে:
“যদি তারা শান্তির দিকে ঝুঁকে, তুমিও শান্তির দিকে ঝুঁকে পড়ো এবং আল্লাহর উপর ভরসা করো।”
— (সূরা আনফাল, আয়াত: ৬১)
🤝 ইসলাম চায় আলোচনার মাধ্যমে সমাধান
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক ড. মাহমুদ হাসান বলেন, “যুদ্ধ কোনো সমাধান নয়। ইসলাম শিক্ষা দেয়, যতক্ষণ না চূড়ান্ত অবিচার বা নিপীড়ন ঘটে, ততক্ষণ যুদ্ধের অনুমতি নেই। বরং দ্বিপাক্ষিক আলোচনা, কূটনৈতিক প্রচেষ্টা ও মানবিক সংলাপের মাধ্যমে সমস্যার সমাধানই ইসলামের আদর্শ পন্থা।”
💬 সাধারণ মুসলিমদের দ্বিধা
এ সংকটে দেশের সাধারণ মুসলিম জনগণের মধ্যে তৈরি হয়েছে নানা মতপার্থক্য। কেউ কেউ আবেগের বশে পক্ষাবলম্বন করছেন, আবার কেউ নিরপেক্ষ থাকাকেই শ্রেয় ভাবছেন। তবে ইসলামিক বিশেষজ্ঞদের মতে, যেকোনো অবস্থায় সত্য ও ন্যায়ের পাশে থাকা, পক্ষপাতহীনভাবে হককে সমর্থন করা এবং অন্ধ আবেগের বশে না যাওয়া অত্যন্ত জরুরি।
🌍 আন্তর্জাতিক শান্তির প্রয়াসে ইসলামের ভূমিকা
ইসলামের বিশ্বব্যাপী শান্তি ও সহনশীলতার বাণী এ সময় আরও বেশি প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠেছে। ইতিহাস সাক্ষ্য দেয়—রাসুলুল্লাহ (সা.) মক্কাবাসীদের নির্যাতনের মুখেও শান্তির প্রস্তাব দিয়েছেন, হুদায়বিয়ার সন্ধির মাধ্যমে যুদ্ধ নয়, আলোচনাকেই বেছে নিয়েছেন।
🕊️ উপসংহার: শান্তি প্রতিষ্ঠায় প্রয়োজন ইসলামি দূরদর্শিতা
বর্তমান পরিস্থিতিতে মুসলিমদের আবেগ নয়, বরং হিকমাহ (প্রজ্ঞা) ও ফিকহের (নৈতিক বোধ) আলোকে চিন্তা করা উচিত। সত্য ও শান্তির পক্ষে অবস্থান নিয়ে নিজেদের অবস্থান ইসলামী মূল্যবোধে দৃঢ় করতে হবে।