নওশাদ, জাহাঙ্গীর, মুনতাসির, মানিক চাঁদ, খোকন, বিল্লাল, তারেক, লোকমান ও দুরুল এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে। রাজশাহীর গোদাগাড়ীর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তালিকাভুক্ত মাদক ব্যবসায়ীরা বিভিন্ন রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় এখনো দাপিয়ে বেড়াচ্ছে বিভিন্ন রাজনৈতিক অনুষ্ঠানে। একসময় সাবেক এমপি ফারুক চৌধুরীর ঘনিষ্ঠ ছিলো ৫আগস্ট এর পর রাজনৈতিক পদ পরিবর্তন হওয়ার সাথে সাথে খোলস পাল্টে ধানের শীষ প্রতীক এর পক্ষে নেমে পড়ে এরা। তারেক, জাহাঙ্গীর, নওশাদ , মামুন, মানিক চাঁদ, বেল্লাল বসু হিরোইনের ব্যবসা করে এদের নামে বিভিন্ন থানায় একাধিক মাদকের মামলা আছে।
জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘনিয়ে আসতেই রাজশাহীর সীমান্তঘেঁষা গোদাগাড়ী ও তানোর উপজেলায় নতুন করে মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে মাদক কারবার চক্র। দীর্ঘদিন ধরে নিয়ন্ত্রণে থাকা মাদক প্রবাহ সাম্প্রতিক সময়ে হঠাৎ বেড়ে যাওয়ায় উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়েছে সাধারণ মানুষের মধ্যে। এলাকাবাসীর দাবি, নির্বাচনের আগে রাজনৈতিক অস্থিরতার সুযোগ কাজে লাগিয়ে মাদক ব্যবসায়ীরা আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেছে।
অভিযোগ রয়েছে, তানোর ও গোদাগাড়ী অঞ্চলে ধানের শীষ প্রতীকের মনোনীত প্রার্থী শরিফ উদ্দিন এবং তার সহযোগী গোদাগাড়ী উপজেলার সাদারপুর গ্রামের নওশাদ, জাহাঙ্গীর, মহিশালবাড়ী গ্রামের মুনতাসির, নিওশাদ, মাদারপুর গ্রামের মামুন, মানিক চাঁদ, লাল বস, তারেক, হলের মোড এলাকার লোকমানের আশ্রয়–প্রশ্রয়ে কিছু চক্র সংগঠিতভাবে মাদক ব্যবসায় জড়িয়ে পড়েছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, এই নেটওয়ার্কটি সীমান্তপথ ব্যবহার করে হিরোইন গোদাগাড়ী হয়ে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ছড়িয়ে দিচ্ছে।
মাদক ব্যবসার জন্য সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত হচ্ছে গোদাগাড়ী উপজেলার শাহবাজপুর, দেওপাড়া, মাটিকাটা ও বাসুদেবপুর ইউনিয়ন। এলাকাবাসী জানান, সন্ধ্যা নামলেই বিভিন্ন স্থানে প্রকাশ্যেই মাদক কেনাবেচা চলে। মাত্র কয়েকশ টাকার বিনিময়ে মিলছে নেশা এতে করে কিশোর–তরুণদের মধ্যে আসক্তির হার দ্রুত বাড়ছে। ফলে পারিবারিক অস্থিরতা, চুরি–ছিনতাইসহ সামাজিক অপরাধের বৃদ্ধি পেয়েছে।
গোদাগাড়ী থানা পুলিশ জানায়, তারা প্রতিনিয়ত মাদকবিরোধী অভিযান পরিচালনা করছে। সাম্প্রতিক অভিযানে বিভিন্ন নেশাজাতীয় দ্রব্য ও পাচারে ব্যবহৃত যানবাহন জব্দসহ বেশ কয়েকজনকে গ্রেপ্তারও করা হয়েছে। তবুও সীমান্তের ভৌগোলিক অবস্থান এবং সুসংগঠিত চক্রের কারণে চোরাচালান পুরোপুরি রোধ করা চ্যালেঞ্জের বলে মন্তব্য করেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
এদিকে সচেতন নাগরিক সমাজ মনে করছেন, নির্বাচনের আগে রাজনৈতিক ছত্রছায়া থাকলে মাদকচক্র আরও শক্তিশালী হয়ে উঠবে। তারা প্রশাসনকে কঠোর নজরদারি, সীমান্তে বিশেষ অভিযান এবং মাদককারবারি ও তাদের পৃষ্ঠপোষকদের বিরুদ্ধে দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন। পাশাপাশি তরুণ সমাজকে রক্ষায় পরিবার, স্কুল–কলেজ ও স্থানীয় নেতৃত্বকে একসঙ্গে কাজ করার আহ্বানও জানানো হয়েছে ।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন বিএনপি নেতারা জানান, দীর্ঘদিন চাকরি করার সুবাদে শরিফ এলাকার জনগণের কাছ থেকে দূরে ছিলো। তাকে দল থেকে মনোনয়ন দেওয়ায় এই আসনটি জামাতের নিয়ন্ত্রণে চলে যাবে।
স্থানীয়দের দাবি তালিকাভুক্ত মাদক ব্যবসায়ীদের কে অবিলম্বে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় না নিয়ে আসলে এই এলাকার কিশোর যুব সমাজ ধ্বংস হয়ে যাবে। পুলিশ বলছে এসব মাদক ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে খুব দ্রুত অভিযানে গ্রেফতার করে তাদের আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে।

