নিজস্ব ধর্ম প্রতিবেদক:
হজ একটি দীর্ঘ, কষ্টসাধ্য এবং পবিত্র ইবাদত। এই ইবাদতের জন্য মুসলমানরা পরিবার, সমাজ ও স্বদেশ ছেড়ে ভিন্ন পরিবেশে, ভিন্ন সংস্কৃতির দেশে যান। তাই হজে যাওয়ার আগে প্রয়োজন সঠিক প্রস্তুতি—শারীরিক, মানসিক এবং জ্ঞানগতভাবে।
প্রাজ্ঞ আলেমগণ কোরআন, হাদিস, সাহাবায়ে কেরাম ও পূর্বসূরি আলেমদের অভিজ্ঞতার আলোকে হজযাত্রীদের প্রস্তুতির জন্য ১০টি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের উপর গুরুত্বারোপ করেছেন। তারা মনে করেন, এই ১০ প্রস্তুতিমূলক কাজ পালন করলে হজ হবে সহজ, সার্থক ও পূর্ণাঙ্গ।
হজে যাওয়ার আগে হজযাত্রীর ১০ প্রস্তুতি:
১. নিয়ত বিশুদ্ধ করা:
হজ কেবলমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে করতে হবে। এতে কোনো প্রকার লোক দেখানো বা দুনিয়াবি স্বার্থ যেন না থাকে।
২. হালাল উপার্জন থেকে খরচ নিশ্চিত করা:
হজে ব্যবহৃত অর্থ সম্পূর্ণ হালাল হতে হবে। হারাম সম্পদ দিয়ে হজ কবুল হয় না।
৩. ফরজ ওয়াজিব ইবাদতের হক আদায় করা:
নামাজ, রোজা, যাকাতসহ সকল ফরজ ইবাদতের হক আদায় করে যেতে হবে।
৪. ঋণ ও পাওনা পরিশোধ করা:
কারও কাছে ঋণ থাকলে তা পরিশোধ করে যেতে হবে। সম্ভব না হলে উত্তরাধিকারের কাছে জানিয়ে যেতে হবে।
৫. পরিবারের দায়িত্ব নিশ্চিত করা:
অনুপস্থিতিতে পরিবারের জন্য পর্যাপ্ত আর্থিক ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা রেখে যেতে হবে।
৬. তাওবা ও ইস্তিগফার করা:
পূর্বের সকল গুনাহ থেকে খালিস মনে তাওবা করা জরুরি, যেন হজের সময় অন্তর পবিত্র থাকে।
৭. কোনো কারও হক নষ্ট করলে তা ফিরিয়ে দেওয়া:
কারও সঙ্গে অন্যায় করে থাকলে তা মিটমাট করে নেওয়া ও ক্ষমা চেয়ে নেওয়া জরুরি।
৮. হজের মাসআলা-মাসায়েল জানা:
হজের ফরজ, ওয়াজিব, সুন্নত ও মাকরুহ বিষয়াদি জেনে নেওয়া উচিত, যেন ভুল এড়িয়ে যাওয়া যায়।
৯. সফরের প্রস্তুতি নেওয়া:
প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস, ওষুধ, পোশাক ও অন্যান্য সামগ্রী সঠিকভাবে প্রস্তুত রাখা।
১০. ধৈর্য ও আত্মনিয়ন্ত্রণের মানসিকতা গড়ে তোলা:
ভিড়, কষ্ট, অসুবিধা—সবকিছুতে ধৈর্য ধরতে হবে। হজে রাগ, উত্তেজনা, ঝগড়া এড়িয়ে চলা জরুরি।
আলেমগণ মনে করেন, এসব প্রস্তুতি হজযাত্রীর জন্য আত্মিক পাথেয় হিসেবে কাজ করে। হজ যেন শুধুই একটি সফর না হয়ে, আত্মশুদ্ধির একটি সুবর্ণ সুযোগ হয়—এই প্রস্তুতিগুলো তা নিশ্চিত করে।