‘ইত্যাদি’র অংশ ব্যবহার করে ডায়াবেটিস পণ্যের প্রচার—জালিয়াত চক্রের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বের
নিজস্ব প্রতিবেদক
ঢাকা, বুধবার
দেশের জনপ্রিয় উপস্থাপক ও সাংস্কৃতিক অঙ্গনের অন্যতম শীর্ষ ব্যক্তিত্ব হানিফ সংকেত সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি ভুয়া বিজ্ঞাপনচিত্রের বিরুদ্ধে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। বিজ্ঞাপনটিতে তাঁর কণ্ঠস্বর নকল করে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) প্রযুক্তির মাধ্যমে তৈরি করা হয়েছে ডায়াবেটিসবিষয়ক একটি প্রতারণামূলক প্রচার।
বিষয়টি নিয়ে হানিফ সংকেত তার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে প্রকাশিত এক স্ট্যাটাসে বলেন, “গত কিছুদিন ধরে লক্ষ্য করছি, একটি প্রতারক চক্র ফেসবুক ও ইউটিউবসহ বিভিন্ন মাধ্যমে ‘ইত্যাদি’ অনুষ্ঠানের উপস্থাপনার অংশ ব্যবহার করে এআই প্রযুক্তির মাধ্যমে ডায়াবেটিস সংক্রান্ত বিজ্ঞাপন প্রচার করছে।”
তিনি আরও জানান, “যারা এই প্রতারণার সঙ্গে জড়িত, তাদের বিরুদ্ধে আমি খুব শিগগিরই আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করব। এটি কেবল আমার ব্যক্তিগত সম্মানহানিই নয়, সাধারণ মানুষকে ভুয়া ও বিভ্রান্তিকর তথ্য দিয়ে প্রতারণাও।”
জনপ্রিয়তা কাজে লাগিয়ে প্রতারণা
দেশজুড়ে বহুল প্রচারিত ও সমাদৃত ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান ‘ইত্যাদি’র জনপ্রিয়তা ও হানিফ সংকেতের কণ্ঠস্বরের প্রতি মানুষের আস্থা কাজে লাগিয়ে প্রতারক চক্রটি ভুয়া চিকিৎসা ও পণ্যের বিজ্ঞাপন তৈরি করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। বিজ্ঞাপনটিতে এআই প্রযুক্তির মাধ্যমে হুবহু হানিফ সংকেতের মতো কণ্ঠ ও উপস্থাপনভঙ্গি ব্যবহার করা হয়েছে, যাতে দর্শকরা বিভ্রান্ত হন এবং পণ্যটিকে বিশ্বাসযোগ্য মনে করেন।
আইটি বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা
সাইবার নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা বলছেন, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) অপব্যবহার করে এভাবে জনপ্রিয় ব্যক্তিদের কণ্ঠস্বর ও মুখাবয়ব নকল করে ভুয়া প্রচার চালানো সাম্প্রতিক সময়ে এক গুরুতর সমস্যা হয়ে উঠেছে।
আইটি আইন বিশেষজ্ঞ ব্যারিস্টার মাহমুদ হাসান বলেন, “এ ধরনের কার্যক্রম ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের স্পষ্ট লঙ্ঘন। এটি প্রতারণা এবং মানহানির শামিল, এবং এর বিরুদ্ধে কঠোর আইনি ব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারে।”
সাধারণ জনগণকে সতর্ক থাকার আহ্বান
হানিফ সংকেত তাঁর ভক্ত ও সাধারণ জনগণকে এসব ভুয়া প্রচারের ফাঁদে না পড়ার জন্য সতর্ক করে দিয়েছেন। তিনি বলেন, “আমি কখনো কোনো ওষুধ বা পণ্যের বিজ্ঞাপন করি না। যারা আমার কণ্ঠ ও জনপ্রিয়তা ব্যবহার করে মিথ্যা প্রচার চালাচ্ছে, তাদের বিষয়ে সবাইকে সচেতন থাকতে হবে।”
উপসংহার
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রতারণামূলক কনটেন্ট ও বিজ্ঞাপন দিন দিন বাড়ছে। জনপ্রিয় ব্যক্তিদের পরিচিতি ও বিশ্বাসযোগ্যতা ব্যবহার করে জনসাধারণকে বিভ্রান্ত করার এই প্রবণতা বন্ধে প্রয়োজন প্রযুক্তিগত নজরদারি ও কঠোর আইন প্রয়োগ। এ ঘটনায় কেবল হানিফ সংকেতই নন, বরং সম্মিলিতভাবে সকল শিল্পী, সংবাদমাধ্যম ও সাইবার নিরাপত্তা সংস্থার পক্ষ থেকেও প্রতিরোধমূলক পদক্ষেপ নেওয়া সময়ের দাবি হয়ে উঠেছে।