ছিনতাই-চাঁদাবাজির ভয়ে বিনিয়োগে অনীহা | ডিসিসিআই মতবিনিময় সভায় সরব ব্যবসায়ী সমাজ
নিজস্ব প্রতিবেদক:
দেশে চলমান আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতিতে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন দেশের ব্যবসায়ী সমাজ। তারা বলেন, বিগত আট মাসে আইনশৃঙ্খলার কাঙ্ক্ষিত উন্নতি না হয়ে বরং তা আরও অবনতির দিকে যাচ্ছে। এতে করে ব্যবসা-বাণিজ্য পরিচালনায় মারাত্মক বাধার সৃষ্টি হচ্ছে। ছিনতাই, চাঁদাবাজি ও দস্যুতা বেড়ে যাওয়ায় ব্যবসায়ীরা চরম আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন।
বুধবার রাজধানীতে ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় এসব কথা বলেন শীর্ষস্থানীয় ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ। সভায় উপস্থিত ছিলেন ডিসিসিআই সভাপতি শামীম আহমেদ, সহ-সভাপতি রুবিনা পারভীন, ব্যবসায়ী নেতা আনোয়ার হোসেন, শিল্প উদ্যোক্তা মনিরুল ইসলামসহ অনেকেই।
সভায় ব্যবসায়ীরা অভিযোগ করেন, রাজধানীসহ বিভিন্ন শহরে প্রতিনিয়ত চাঁদাবাজ চক্র সক্রিয় হয়ে উঠেছে। দোকান, কারখানা ও পরিবহন খাতের প্রতিটি স্তরে চাঁদা দিতে বাধ্য করা হচ্ছে। অন্যদিকে, রাত নামলেই ছিনতাইয়ের ঘটনা বাড়ছে। এতে করে শ্রমিকদের চলাচল ও পণ্যের নিরাপদ পরিবহন ব্যাহত হচ্ছে।
ব্যবসায়ীদের অভিযোগ:
ডিসিসিআই সভাপতি শামীম আহমেদ বলেন, “দেশের অর্থনৈতিক অগ্রযাত্রার অন্যতম চালিকাশক্তি বেসরকারি খাত। কিন্তু নিরাপত্তার অভাবে এখন অনেক বিনিয়োগকারী উদ্যোগ নিতে ভয় পাচ্ছেন। এই অবস্থায় দ্রুত সময়ের মধ্যে কার্যকর ব্যবস্থা না নিলে অর্থনৈতিক গতি থমকে যাবে।”
ব্যবসায়ী মনিরুল ইসলাম বলেন, “প্রতিদিনই রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় চাঁদাবাজ চক্র আমাদের চালান আটকিয়ে টাকা আদায় করছে। পুলিশের কাছে অভিযোগ করলেও ব্যবস্থা নিতে দেখা যায় না।”
একইসঙ্গে তারা নিরাপত্তা বাহিনীর মধ্যেও কিছু ‘অবাঞ্ছিত’ সদস্যের বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলেন যারা চাঁদাবাজদের সহযোগিতা করে।
প্রস্তাবনা ও দাবি:
সভায় ব্যবসায়ীরা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তৎপরতা আরও জোরদার করা, ব্যবসা এলাকায় নিয়মিত টহল, সিসিটিভি মনিটরিং ব্যবস্থা চালু এবং ব্যবসায়ী সংগঠনগুলোর সঙ্গে যৌথভাবে নিরাপত্তা পরিকল্পনা গ্রহণের দাবি জানান।
প্রশাসনের প্রতিক্রিয়া:
ঢাকা মহানগর পুলিশের প্রতিনিধি সভায় উপস্থিত থেকে বলেন, “আমরা ব্যবসায়ীদের উদ্বেগ বুঝতে পারছি। আপনারা তথ্য-প্রমাণসহ অভিযোগ দিলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এছাড়া ডিসিসিআই-এর সঙ্গে যৌথ টাস্কফোর্স গঠনের বিষয়টিও বিবেচনায় নেওয়া হবে।”