বিপাকে শত শত দোকানদার, সীমাহীন দুর্ভোগে সাধারণ মানুষ
নিজস্ব প্রতিবেদক, সাভার:
সাভারের আশুলিয়া, জামগড়া ও শিমুলতলা এলাকায় টানা বৃষ্টিতে সৃষ্টি হয়েছে নজিরবিহীন জলাবদ্ধতা। এসব এলাকার প্রধান সড়ক থেকে শুরু করে অলি-গলি, বাজার ও ঘনবসতিপূর্ণ দোকানপট্টি—সবই এখন বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে গেছে। শত শত দোকানপাট পানিতে ডুবে যাওয়ায় ব্যবসায়ীরা পড়েছেন চরম ক্ষতির মুখে। সাধারণ মানুষের দুর্ভোগও ছুঁয়েছে সীমার ঊর্ধ্বে।
প্রতিদিনের মতো দোকান খুলতেই দেখে যায়, ফ্লোর থেকে শুরু করে র্যাকের মাল পর্যন্ত পানিতে ভিজে গেছে। বিশেষ করে জামগড়া ও শিমুলতলার মোড় এলাকার কাপড়, জুতা, প্লাস্টিক ও মুদি দোকানগুলো সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
আশুলিয়া বাজারের ব্যবসায়ী মো. নুরুল ইসলাম বলেন, “ভোরে দোকানে এসে দেখি, সব কিছু পানিতে ভাসছে। কমপক্ষে এক লাখ টাকার ক্ষতি হয়ে গেছে। প্রতি বছরই এই সমস্যার মুখে পড়তে হয়, কিন্তু প্রশাসনের কোনো কার্যকর ব্যবস্থা নেই।”
শিমুলতলা এলাকার মুদি দোকানদার রফিকুল ইসলাম বলেন, “চাল, ডাল, তেল—সবই নষ্ট হয়ে গেছে। দোকানের মাল তুলেও রাখা যায়নি, এত দ্রুত পানি উঠে গেছে।”
শুধু ব্যবসায়ীরাই নয়, সাধারণ পথচারী ও বাসিন্দারাও পড়েছেন দুর্ভোগে। হাঁটু থেকে কোমর পর্যন্ত পানি জমে থাকায় অফিসগামী মানুষ থেকে শুরু করে স্কুলগামী শিশুরা পড়েছে বিপাকে।
স্থানীয় বাসিন্দা শারমিন আক্তার বলেন, “বাড়ির গেইট খুলতেই দেখি পানি। বাচ্চাদের স্কুলে নিয়ে যাওয়া যায় না, বাজারে যাওয়া যায় না। কোনো জায়গায় শুকনা জায়গা নেই।”
এলাকাবাসী অভিযোগ করেন, আশুলিয়া ও জামগড়ার মতো জনবহুল এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে সঠিক ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায় বর্ষা মৌসুমে এমন দুর্দশা নিয়মিত ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ বিষয়ে আশুলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের এক কর্মকর্তার কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, “জলাবদ্ধতা নিরসনে আমরা কাজ করছি। কিছুদিনের মধ্যেই ড্রেন উন্নয়নের প্রকল্প হাতে নেওয়া হবে।”
তবে স্থানীয়দের প্রশ্ন—”প্রতিশ্রুতি শুনতে শুনতে আমাদের বছর পার হয়ে যায়, কিন্তু বাস্তবে পরিবর্তন কিছুই হয় না।”
পর্যবেক্ষকরা মনে করছেন, এই জলাবদ্ধতা শুধুমাত্র প্রাকৃতিক দুর্যোগ নয়, এটি পরিকল্পনার অভাব, দুর্বল নগর ব্যবস্থাপনা এবং অবৈধ দখলের কুফল। অবিলম্বে কার্যকর ব্যবস্থা না নিলে ভবিষ্যতে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হয়ে উঠবে।