নিজস্ব প্রতিবেদক:
ভারতের নদীশাসন নীতির কড়া সমালোচনা করে গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেছেন, “ভারত বছরের পর বছর ধরে বাংলাদেশের প্রাণ ও প্রকৃতির ওপর মরুকরণ চাপিয়ে দিয়েছে। এটি কেবল রাজনৈতিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমেই প্রতিহত করা সম্ভব।” তিনি বলেন, “নদীতে একতরফা বাঁধ দিয়ে ভারত যে আধিপত্যবাদী মনোভাব প্রদর্শন করছে, তা বন্ধ করতে হবে গণতান্ত্রিক শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে।”
শুক্রবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে আয়োজিত এক সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। ঐতিহাসিক ফারাক্কা লংমার্চ দিবস উপলক্ষে এ সমাবেশের আয়োজন করে গণসংহতি আন্দোলন।
‘ভারতের দাপট ভাঙতে হবে গণতান্ত্রিক শক্তির মাধ্যমে’
জোনায়েদ সাকি বলেন, “ফারাক্কা বাঁধ শুধু একটি বাঁধ নয়, এটি হলো বাংলাদেশে প্রাকৃতিক নিপীড়নের প্রতীক। নদীর পানি আটকে রেখে ভারতের এই আচরণ আন্তর্জাতিক আইন ও প্রতিবেশীসুলভ নীতিমালার সম্পূর্ণ পরিপন্থী।”
তিনি আরও বলেন, “বাংলাদেশের নদ-নদী, প্রাণবৈচিত্র্য ও কৃষি যে মারাত্মক হুমকির মুখে পড়ছে, তার বড় কারণ হচ্ছে ভারতের পানি আগ্রাসন। এই আগ্রাসনের বিরুদ্ধে শুধু কূটনৈতিক নয়, প্রয়োজন রাজনৈতিক প্রতিরোধও।”
ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট স্মরণ
ফারাক্কা লংমার্চ দিবসটি বাংলাদেশের পানি অধিকার আন্দোলনের একটি গুরুত্বপূর্ণ স্মারক। ১৯৭৬ সালের ১৬ মে মাওলানা আবদুর রহমানের নেতৃত্বে লাখো মানুষ রাজশাহী থেকে ফারাক্কা বাঁধের উদ্দেশে লংমার্চে অংশ নেন। এই দিবসটি প্রতি বছরই বাংলাদেশের নদী রক্ষা আন্দোলনের অঙ্গ হিসেবে পালিত হয়ে আসছে।
সমাবেশে অন্যদের বক্তব্য
সমাবেশে আরও উপস্থিত ছিলেন গণসংহতি আন্দোলনের কেন্দ্রীয় নেতা মনির উদ্দিন পাপ্পু, ফারজানা আহমেদ, রিফাত শামীমসহ অনেকে। তাঁরা ভারতের একতরফা পানি ব্যবস্থাপনার বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ জানান এবং বাংলাদেশের স্বার্থ রক্ষায় সরকারকে আরও দৃঢ় অবস্থান নেওয়ার আহ্বান জানান।
উপসংহার
বক্তারা বলেন, পানি শুধু প্রাকৃতিক সম্পদ নয়, এটি দেশের সার্বভৌমত্বের সঙ্গে সম্পৃক্ত। তাই পানির ওপর যে কোনো বিদেশি নিয়ন্ত্রণের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ চালিয়ে যেতে হবে। জোনায়েদ সাকির ভাষায়, “ভারত রাষ্ট্রের দাপট ভাঙতে হলে দরকার একটি শক্তিশালী ও সচেতন গণতান্ত্রিক আন্দোলন।”
ফারাক্কা লংমার্চের এই দিনে নতুন প্রজন্মের প্রতি আহ্বান জানানো হয়—নদী ও প্রকৃতি রক্ষার লড়াইয়ে যুক্ত হয়ে উঠার।