বাংলাদেশ সরকারের অনুরোধে ব্রিটিশ এনসিএ’র বড় পদক্ষেপ
লন্ডন ও ঢাকা থেকে বিশেষ প্রতিবেদক
বাংলাদেশের সাবেক ভূমিমন্ত্রী ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতা সাইফুজ্জামান চৌধুরীর যুক্তরাজ্যে থাকা একাধিক সম্পত্তি জব্দ করেছে ব্রিটেনের জাতীয় অপরাধ সংস্থা (National Crime Agency – NCA)। বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে পাঠানো আনুষ্ঠানিক অনুরোধের ভিত্তিতে এই পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে যুক্তরাজ্যের স্বরাষ্ট্র দপ্তর।
বর্তমানে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের সাবেক এই মন্ত্রী বিরুদ্ধে অর্থ পাচার, দুর্নীতিসহ একাধিক আর্থিক অপরাধের অভিযোগে বাংলাদেশে তদন্ত চলছে। সে তদন্তের অংশ হিসেবে ব্রিটিশ কর্তৃপক্ষ তার বিদেশে অর্জিত সম্পদের বিরুদ্ধে এই আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে।
আন্তর্জাতিক আইনি সহায়তা চুক্তির আওতায় পদক্ষেপ
বাংলাদেশ ও যুক্তরাজ্যের মধ্যে বিদ্যমান আন্তর্জাতিক আইনি সহায়তা চুক্তির (Mutual Legal Assistance Treaty – MLAT) আওতায় এই সম্পত্তি জব্দের প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে। এনসিএ’র একজন মুখপাত্র ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমকে জানান, “আমরা একটি আন্তর্জাতিক অনুরোধের ভিত্তিতে সম্ভাব্য অবৈধ সম্পদ সনাক্ত ও জব্দ করেছি। তদন্ত চলমান রয়েছে এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করছি।”
লন্ডনের অভিজাত এলাকায় বিলাসবহুল সম্পত্তি
জব্দ হওয়া সম্পত্তিগুলোর মধ্যে রয়েছে লন্ডনের চেলসি ও কেনসিংটনের অভিজাত এলাকায় দুটি অ্যাপার্টমেন্ট, একটি বাণিজ্যিক ভবনের অংশ এবং একটি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট যার মাধ্যমে বিপুল অর্থ লেনদেনের প্রমাণ পাওয়া গেছে। সূত্র জানায়, এসব সম্পদ ২০১২ থেকে ২০১৮ সালের মধ্যে ক্রয় করা হয়েছিল, যেগুলোর প্রকৃত মালিকানা নিয়ে তদন্ত চলছে।
বাংলাদেশে তদন্তের অগ্রগতি
বাংলাদেশ দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ইতোমধ্যে সাইফুজ্জামান চৌধুরীর বিরুদ্ধে একাধিক মামলা করেছে। তদন্ত সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা জানান, “বিদেশে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে আমরা তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করছি। যুক্তরাজ্যের পদক্ষেপ আমাদের তদন্তকে আরও শক্তিশালী করেছে।”
সাইফুজ্জামান চৌধুরীর প্রতিক্রিয়া
এই বিষয়ে জানতে সাবেক মন্ত্রীর সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তার পক্ষ থেকে কোনো আনুষ্ঠানিক বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে ঘনিষ্ঠ এক সূত্র জানিয়েছেন, তিনি বর্তমানে সংযুক্ত আরব আমিরাতে অবস্থান করছেন এবং সব অভিযোগ ‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’ বলে দাবি করেছেন।
বিশ্লেষকদের মত
রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও আন্তর্জাতিক আইন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই ঘটনা বাংলাদেশের জন্য এক গুরুত্বপূর্ণ নজির সৃষ্টি করেছে। কারণ, এটি প্রমাণ করে যে বিদেশে পাচার করা অর্থ ফেরত আনার জন্য আন্তর্জাতিক সহায়তা সম্ভব।
আরও পড়ুন:
-
শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর দুর্নীতিবিরোধী অভিযান তীব্র
-
বিদেশে আর কারা রয়েছে দুর্নীতির নজরদারিতে?
-
এনসিএ কীভাবে কাজ করে? জানুন বিস্তারিত
দৈনিক আশুলিয়া | সত্য প্রকাশে অঙ্গীকারবদ্ধ
ই-মেইল: news@dainikashulia.com | ফোন: +৮৮০১৭১৪৩৪০৪১৭