বিশেষ প্রতিবেদক, আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
অবরুদ্ধ ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় দখলদার ইসরায়েলি বাহিনীর অব্যাহত বর্বর হামলার মধ্যেই আরও তিনটি দেশে আক্রমণ চালিয়েছে তেল আবিব। ইয়েমেনে হুতিদের পাল্টা হামলার হুঁশিয়ারি, সিরিয়া ও লেবাননে সামরিক উত্তেজনা—সব মিলিয়ে মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে অস্থিতিশীলতা আরও তীব্র আকার ধারণ করছে।
আল-জাজিরার খবরে বলা হয়, সোমবার দিনভর গাজা, ইয়েমেন, সিরিয়া ও লেবাননে একযোগে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী। এসব হামলায় এখন পর্যন্ত কমপক্ষে ৫৪ জন নিহত হয়েছেন বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে।
বিশেষ করে ইয়েমেনের হুতি বিদ্রোহীদের ইসরায়েলের একটি গুরুত্বপূর্ণ বিমানবন্দরে ক্ষেপণাস্ত্র হামলার জেরে তেল আবিব হুঁশিয়ারি দিয়েছিল পাল্টা আক্রমণের। সেই হুমকির বাস্তবায়ন হিসেবেই ইসরায়েল সোমবার ইয়েমেনে বিস্ফোরক ও ড্রোন হামলা চালায়।
সিরিয়া ও লেবাননে ইসরায়েলের আগ্রাসন
ইসরায়েলি যুদ্ধবিমান সোমবার রাতে সিরিয়ার দক্ষিণাঞ্চলে কয়েকটি সামরিক অবস্থানে বোমাবর্ষণ করে। লেবাননের দক্ষিণ সীমান্তে হিজবুল্লাহর ঘাঁটিগুলোতেও আক্রমণের খবর পাওয়া গেছে। এতে বেশ কয়েকজন নিহত ও আহত হয়েছেন বলে আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থাগুলো জানিয়েছে।
গাজা অভিযানে নতুন অনুমোদন
এদিকে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর নেতৃত্বাধীন যুদ্ধ মন্ত্রিসভা গাজায় আরও আক্রমণাত্মক অভিযান পরিচালনার অনুমোদন দিয়েছে। ইসরায়েলি পাবলিক ব্রডকাস্টার ‘কান’ জানিয়েছে, ইতিমধ্যেই সেনাপ্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল ইয়াল জামির ঘোষণা দিয়েছেন, হামাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ সম্প্রসারণে রিজার্ভ বাহিনীর হাজারো সেনা ডাকা হয়েছে।
মানবিক সংকট চরমে
গাজা উপত্যকায় চলমান বিমান হামলায় নারী ও শিশুর মৃত্যু বেড়েই চলেছে। মানবাধিকার সংস্থাগুলো বলছে, খাদ্য, পানি ও চিকিৎসা সংকটে বিপর্যস্ত গাজাবাসীর জীবন এখন ভয়াবহ হুমকির মুখে।
বিশ্লেষণ:
ইসরায়েলের এই বহুমুখী হামলা মধ্যপ্রাচ্যকে আরও অস্থির করে তুলছে। আঞ্চলিক শক্তিগুলোর প্রতিক্রিয়া, আন্তর্জাতিক নিষ্ক্রিয়তা ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিস্তার—সব মিলিয়ে এই উত্তপ্ত পরিস্থিতি আরও দীর্ঘমেয়াদি সংঘাতে রূপ নিতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন বিশ্লেষকরা।