📰 দৈনিক আশুলিয়া
প্রকাশকাল: ২৪ জুন ২০২৫ | মঙ্গলবার | সম্পাদক: কাজী আল-আমিন
মূল প্রতিবেদন | আন্তর্জাতিক ও অর্থনীতি বিভাগ
আন্তর্জাতিক ডেস্ক | দৈনিক আশুলিয়া
ইরান-ইসরায়েল উত্তেজনা দ্রুত এক ভয়াবহ যুদ্ধের দিকে ধাবিত হচ্ছে। ইরানের ভূখণ্ডে আকস্মিক মার্কিন হামলার পর মধ্যপ্রাচ্যে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে উঠেছে। এরই মধ্যে ইরানের পার্লামেন্ট ঐতিহাসিক হরমুজ প্রণালি বন্ধের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে, যা বিশ্ব অর্থনীতিতে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করতে পারে।
বিশ্লেষকদের মতে, এই সংঘাত এখন কেবল দ্বিপাক্ষিক নয়, বরং আন্তর্জাতিক পরাশক্তিগুলোর অংশগ্রহণে একটি বৃহৎ আঞ্চলিক যুদ্ধের রূপ নিতে পারে। এর প্রভাব শুধু মধ্যপ্রাচ্যে সীমাবদ্ধ না থেকে বিশ্বের সব অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়তে পারে।
হরমুজ প্রণালি বন্ধ: বৈশ্বিক জ্বালানি বাজারে বড় ধাক্কার আশঙ্কা
ইরানের পার্লামেন্টের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, হরমুজ প্রণালি যে কোনো সময় সাময়িকভাবে বন্ধ করে দেওয়ার নির্দেশ কার্যকর হতে পারে। মনে রাখা দরকার, এই প্রণালির মধ্য দিয়েই বিশ্বের প্রায় ২০ শতাংশ জ্বালানি তেল সরবরাহ হয়। এটি বন্ধ হয়ে গেলে তেলের সরবরাহে ভয়াবহ সংকট দেখা দেবে।
ইতিমধ্যেই যুদ্ধ শুরুর পর থেকে বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম বেড়েছে ১০ শতাংশের বেশি। তেলের দামে এই অস্বাভাবিক উল্লম্ফন খাদ্যদ্রব্যসহ অন্যান্য ভোগ্যপণ্যের ওপরও প্রভাব ফেলতে শুরু করেছে।
বাংলাদেশের অর্থনীতিতে প্রভাব: প্রবাস আয়, আমদানি-রপ্তানি, শিল্প খাত হুমকির মুখে
অর্থনীতিবিদ ও ব্যবসায়ী নেতারা মনে করছেন, মধ্যপ্রাচ্যের এই সংঘাত বাংলাদেশের অর্থনীতিতে সরাসরি ও পরোক্ষ প্রভাব ফেলতে পারে।
⚠️ সম্ভাব্য ক্ষতির দিকগুলো:
-
প্রবাস আয় হ্রাস:
মধ্যপ্রাচ্যের শ্রমবাজারে অস্থিরতা দেখা দিলে বহু প্রবাসী চাকরি হারাতে পারেন। এতে বাংলাদেশের বৈদেশিক রেমিট্যান্স প্রবাহে ধস নামবে। -
আমদানি-রপ্তানিতে বিঘ্ন:
তেলসহ কাঁচামাল পরিবহনে সমস্যা হলে দেশের রপ্তানি খাতে বড় সংকট দেখা দেবে। শিপিং সময় ও খরচ বেড়ে যাবে, যা রপ্তানি প্রতিযোগিতা হ্রাস করবে। -
শিল্প উৎপাদনে সমস্যা:
তেল-গ্যাস সরবরাহ বাধাগ্রস্ত হলে দেশের গার্মেন্টস, কেমিক্যাল, প্লাস্টিকসহ নানা শিল্প খাত জ্বালানি সংকটে পড়বে। কারখানাগুলো আবার বন্ধ হওয়ার ঝুঁকিতে। -
মূল্যস্ফীতি বেড়ে যাবে:
তেলের দাম বাড়লে পরিবহন ব্যয় ও উৎপাদন খরচ বেড়ে যাবে, যার প্রভাব পড়বে নিত্যপণ্যের দামে। এতে জরুরি খাদ্য ও ভোগ্যপণ্যের দাম অস্বাভাবিক হারে বাড়বে।
বিশ্লেষকদের মত: সময় থাকতে প্রস্তুতি দরকার
অর্থনীতিবিদ ড. আনোয়ার হোসেন দৈনিক আশুলিয়াকে বলেন:
“রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের মতো, ইরান-ইসরায়েল সংঘাতও বিশ্বব্যাপী সরবরাহ শৃঙ্খলা ভেঙে দিতে পারে। বাংলাদেশের মতো আমদানি-নির্ভর অর্থনীতির জন্য এটা মারাত্মক। সরকারকে এখনই বিকল্প জ্বালানি সরবরাহ ও পণ্যের স্টক গঠনের উদ্যোগ নিতে হবে।”
ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির এক প্রতিনিধি বলেন:
“আমরা আবার এমন এক বৈশ্বিক ঝুঁকির মুখে, যেখান থেকে দ্রুত উত্তরণ না ঘটলে মূল্যস্ফীতি, কর্মসংস্থান ও বিনিয়োগ — সবই ক্ষতিগ্রস্ত হবে।”
উপসংহার: কূটনৈতিক সমাধানই একমাত্র পথ
বিশ্বশান্তি ও অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার স্বার্থে ইরান-ইসরায়েল সংঘাতের সমাধান কূটনৈতিকভাবে করতে হবে — এমনটাই মত বিশ্লেষকদের। পরাশক্তিগুলোর হস্তক্ষেপ না হলে, এই সংকট যে কোনো সময় একটি পূর্ণমাত্রার যুদ্ধ হয়ে উঠতে পারে। আর তার প্রভাব অনিবার্যভাবে পড়বে বাংলাদেশের অর্থনীতিতেও।
🔎 SEO কীওয়ার্ডস:ইরান-ইসরায়েল যুদ্ধ
, হরমুজ প্রণালি বন্ধ
, বাংলাদেশ অর্থনীতিতে যুদ্ধের প্রভাব
, তেলের দাম বৃদ্ধি
, মূল্যস্ফীতি ২০২৫
, প্রবাস আয় সংকট
, জ্বালানি সংকট
, বৈশ্বিক অর্থনৈতিক বিপর্যয়
, দৈনিক আশুলিয়া আন্তর্জাতিক সংবাদ
📲 আমাদের অনলাইন ভার্সন দেখতে ক্লিক করুন: www.dainikashulia.com
📢 ফেসবুকে যুক্ত থাকুন: @dainikashuliaofficial