ঢাকাMonday , 5 May 2025
  1. অর্থনীতি
  2. আইন-আদালত
  3. আন্তর্জাতিক
  4. আবহাওয়া
  5. খেলাধুলা
  6. জাতীয়
  7. ধর্ম ও জীবন
  8. বিনোদন
  9. বিশেষ প্রতিবেদন
  10. রাজনীতি
  11. সারাদেশ
আজকের সর্বশেষ সবখবর

রাজনৈতিক অনিশ্চয়তায় অর্থনীতির গতি রুদ্ধ, সংকটে রাজস্ব ও বিনিয়োগ

Link Copied!

স্টাফ রিপোর্টার | ঢাকা | ০৫ মে ২০২৫

রাজনীতিতে নির্বাচনী প্রস্তুতি ও সংস্কারের দাবিকে কেন্দ্র করে এক ধরনের দোলাচল তৈরি হয়েছে। একদিকে সরকারপক্ষ নির্ধারিত সময়েই নির্বাচন অনুষ্ঠানে অনড়, অন্যদিকে বিরোধীপক্ষ প্রশাসনিক সংস্কার ও অংশগ্রহণমূলক পরিবেশ নিশ্চিতে অনড় অবস্থানে রয়েছে। এই পাল্টাপাল্টি অবস্থান অর্থনীতি ও ব্যবসা-বাণিজ্যে মারাত্মক প্রভাব ফেলছে বলে মনে করছেন অর্থনীতিবিদ ও ব্যবসায়ী নেতারা।

বিশ্লেষকরা বলছেন, রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা যখন দীর্ঘায়িত হয়, তখন বিনিয়োগ ও উৎপাদন খাত স্থবির হয়ে পড়ে। বর্তমানে দেশের অর্থনীতি এক ধরনের সংকটকাল পার করছে। প্রধান প্রধান অর্থনৈতিক সূচকগুলোয় স্থবিরতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে।

আমদানি ও রাজস্বে ধস

রাজস্ব আদায়ে বড় ঘাটতির মুখে পড়েছে সরকার। আমদানি নিরুৎসাহিত হওয়ায় কাস্টমস থেকে রাজস্ব আদায় ব্যাহত হচ্ছে। বৈদেশিক মুদ্রার সংকট ও ব্যাংকিং খাতে ডলারের উচ্চ চাহিদার কারণে কেন্দ্রীয় ব্যাংক নানা বিধিনিষেধ আরোপ করায় পণ্য আমদানি উল্লেখযোগ্যভাবে কমে গেছে।

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) এক সূত্র জানায়, চলতি অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে প্রায় ২৫ হাজার কোটি টাকার ঘাটতি দেখা দিয়েছে।

ব্যবসা চালাতে বাড়তি খরচ

ডলারের বিপরীতে টাকার মূল্য হ্রাস পাওয়ায় আমদানি খরচ বেড়েছে। একই সঙ্গে গ্যাস, বিদ্যুৎ ও জ্বালানির দাম বারবার বাড়ায় উৎপাদন ব্যয় বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তারা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।

বাংলাদেশ শিল্প ও বণিক সমিতি ফেডারেশন (এফবিসিসিআই)-এর এক পরিচালক বলেন, “আমাদের অনেক সদস্য কারখানার উৎপাদন কমিয়ে দিয়েছেন। উচ্চ সুদ, ডলারের দাম এবং জ্বালানি ব্যয়ে ব্যবসা পরিচালনা কঠিন হয়ে পড়েছে।”

বিনিয়োগে মন্দা, ঋণপ্রবাহে ধীরগতি

অর্থনীতিকে চাঙা রাখতে প্রয়োজন বেসরকারি খাতের জোরালো বিনিয়োগ। কিন্তু উচ্চ সুদের হার ও অনিশ্চয়তা ব্যবসায়ীদের বিনিয়োগে নিরুৎসাহিত করছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যমতে, মার্চে বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধি কমে দাঁড়িয়েছে ৮.২ শতাংশে, যা আগের বছরের তুলনায় উল্লেখযোগ্য হারে কম।

অর্থনীতিবিদ ড. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, “বর্তমান পরিস্থিতি দুই দিক থেকে চাপ সৃষ্টি করছে—একদিকে বিনিয়োগ ও উৎপাদন কমে যাচ্ছে, অন্যদিকে ভোগ চাহিদাও কমে যাচ্ছে। ফলে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হার প্রভাবিত হবে।”

চাহিদা-জোগান ভারসাম্যে চাপ

মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক কঠোর নীতিমালা গ্রহণ করেছে। তবে এর খেসারত দিচ্ছে উৎপাদন ও ভোক্তা খাত। মধ্যবিত্ত ও নিম্ন আয়ের মানুষ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য কিনতেও হিমশিম খাচ্ছেন। চাহিদা কমে যাওয়ায় খুচরা বাজারেও মন্দা পরিস্থিতি বিরাজ করছে।

উপসংহার

দেশের অর্থনীতি এখন স্পষ্টভাবে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার অপেক্ষায় রয়েছে। ব্যবসা, বিনিয়োগ ও রাজস্ব ঘাটতির এই পরিস্থিতি দীর্ঘায়িত হলে ভবিষ্যতে আরও বড় সংকট তৈরি হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন বিশ্লেষকরা।