দৈনিক আশুলিয়া
রাঙামাটি প্রতিবেদক:
রাঙামাটির কাপ্তাই হ্রদে মাত্র সাত দিনের মধ্যে মাছের বাম্পার আহরণ হয়েছে। এতে রাজস্ব আয়ের রেকর্ডও ছাড়িয়েছে। গত ২ আগস্ট কাপ্তাই হ্রদে মাছ আহরণ শুরু হওয়ার পর সব ধরনের মাছের উৎপাদন বেড়েছে। হ্রদ থেকে আহরিত মাছের পরিমাণ ইতোমধ্যে দাঁড়িয়েছে ৫৯৫ মেট্রিক টন, যা থেকে রাজস্ব আয় হয়েছে প্রায় ১ কোটি ৩৩ লাখ টাকা, যা গত বছরের তুলনায় দ্বিগুণ।
রাঙামাটি বিএফডিসি সূত্রে জানা গেছে, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সর্ববৃহৎ কৃত্রিম জলধারা ও দেশের প্রধান মৎস্য উৎপাদন ক্ষেত্র কাপ্তাই হ্রদ বাংলাদেশের মিঠা পানির মাছের ভাণ্ডার হিসেবে পরিচিত। এ হ্রদ থেকে আহরিত মাছ চট্টগ্রাম, ঢাকা সহ দেশের বিভিন্ন স্থানে রফতানি করা হয়। এর সুফল ভোগ করে এ অঞ্চলের প্রায় ২৬ হাজার মৎস্যজীবী পরিবার।
মৎস্য উন্নয়ন অধিদপ্তরের উদ্যোগে হ্রদে বিপুল পরিমাণ পোনা মাছ ছাড়া হয়েছে, যা বন্ধকালীন সময়ে প্রাকৃতিকভাবে প্রজনন করেছে। মৎস্যজীবীদের মতে, “হ্রদে মাছের প্রজনন চাহিদার অধিক হওয়ায় উৎপাদনও বাম্পার হচ্ছে। সরকারের রাজস্ব খাত যেমন আয় বৃদ্ধি পাচ্ছে, তেমনি দেশের মিঠা পানির মাছের চাহিদাও পূরণ হচ্ছে।”
মৎস্যজীবীদের কথা:
রাঙামাটি ফিসারি ঘাট সমবায় সমিতির অর্থ সম্পাদক মো. পান্না মিয়া বলেন, “ফিসারি খোলার পর মাছ আহরণ বেড়েছে। তবে প্যাকেজিংয়ের জায়গা সংকট রয়েছে। পল্টন ছাড়িয়ে বিএফডিসি চত্বরে মাছ প্যাকেট করতে হচ্ছে, যা খুবই কষ্টকর। এছাড়া ফিসারি খুলতেই শুল্ক বৃদ্ধি করা হয়েছে, যা অযৌক্তিক।”
বিএফডিসির পক্ষ থেকে:
রাঙামাটি মৎস্য উন্নয়ন অধিদপ্তরের উন্নয়ন ও বিপণী কেন্দ্রের ব্যবস্থাপক কমান্ডার মো. ফয়েজ আল করিম বলেন, “কাপ্তাই হ্রদে মাছের সুষ্ঠু প্রাকৃতিক প্রজনন ও বংশ বিস্তারের কারণে বাম্পার আহরণ সম্ভব হয়েছে। এজন্য বিএফডিসির কর্মকর্তারা কঠোর পরিশ্রম করেছেন।”
তিনি আরও জানান, রাঙামাটি ফিসারিতে ৭৭ জন নিবন্ধিত মৎস্য ব্যবসায়ী রয়েছেন। বিএফডিসিতে ৭৬ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী দায়িত্বে আছেন। কাপ্তাই হ্রদে ৪টি অবতরণ কেন্দ্র রয়েছে—রাঙামাটি সদর, কাপ্তাই উপজেলা, বাঘাইছড়ি উপজেলা (মারিশ্যা) এবং খাগড়াছড়ি মহলছড়ি। এছাড়া রয়েছে ৭টি অভয়াশ্রম। বিএফডিসি প্রতি তিন বছর পরপর শুল্কের পরিমাণ পরিবর্তন করে, এবারও কিছুটা বৃদ্ধি করা হয়েছে।
মাছের প্রজাতি:
কাপ্তাই হ্রদে ৭৩টি দেশীয় প্রজাতি এবং ৬টি বহিরাগত প্রজাতি মাছ পাওয়া যায়, যা প্রতিবছর বৃদ্ধি পাচ্ছে।
রাঙামাটি কাপ্তাই হ্রদ থেকে এই বাম্পার আহরণ স্থানীয় মৎস্যজীবী ও সরকারের জন্য দু’দিকে লাভজনক প্রমাণিত হচ্ছে।