দৈনিক আশুলিয়া
📅 শনিবার, ২৬ জুলাই ২০২৫
📍 আন্তর্জাতিক | এশিয়া ডেস্ক
নিজস্ব প্রতিবেদক | আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
থাইল্যান্ড ও ক্যাম্বোডিয়ার সীমান্তে চলমান সংঘর্ষ ক্রমেই ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে। দুই দেশের সেনাবাহিনীর মধ্যে ভারী অস্ত্রের মুখোমুখি সংঘাতে এখন পর্যন্ত প্রাণ হারিয়েছে ১৬ জন এবং আহত হয়েছে ৫০-এর অধিক। থাইল্যান্ডের ভারপ্রাপ্ত প্রধানমন্ত্রী ফুমথাম ওয়েচায়াচাই হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেছেন—“পরিস্থিতি অব্যাহত থাকলে, এই সংঘর্ষ যুদ্ধে রূপ নিতে পারে।”
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি ও ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপি জানায়, বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) থেকে সীমান্তবর্তী এলাকাগুলোতে শুরু হওয়া সংঘর্ষে জেট বিমান, কামান, ট্যাংক ও পদাতিক বাহিনী জড়িত হয়েছে। পরিস্থিতি এতটাই গুরুতর যে, শুক্রবার জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ এ বিষয়ে এক জরুরি বৈঠক ডেকেছে।
থাই ভূখণ্ডে ‘জোরপূর্বক প্রবেশের’ অভিযোগ
থাই সেনা কমান্ডার শুক্রবার সন্ধ্যায় ক্যাম্বোডিয়ার সীমান্তসংলগ্ন আটটি জেলায় সামরিক আইন জারি করেন। তার দাবি, “ক্যাম্বোডীয় বাহিনী জোরপূর্বক থাইল্যান্ডের ভূখণ্ডে প্রবেশ করেছে।” এর জবাবে থাই সেনাবাহিনী ‘উপযুক্ত পাল্টা ব্যবস্থা’ নিয়েছে বলেও জানান তিনি।
মৃত্যু ও আহতদের তালিকা
-
থাইল্যান্ড: ১৪ জন বেসামরিকসহ ১৫ জন নিহত, আহত ৪৬ জন (এর মধ্যে ১৫ জন সেনা)।
-
ক্যাম্বোডিয়া: কামান হামলায় ৭০ বছর বয়সী এক বৃদ্ধ নিহত, আহত হয়েছেন আরও ৫ জন।
সীমান্তে পালিয়ে যাচ্ছে সাধারণ মানুষ
ক্যাম্বোডিয়ার সামরোয়াং শহরের বাসিন্দারা নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে পালিয়ে যাচ্ছেন। কেউ পরিবার নিয়ে গাড়িতে করে অন্যত্র যাচ্ছেন, কেউ আবার বৌদ্ধ মন্দিরে আশ্রয় নিচ্ছেন।
এক স্থানীয় বাসিন্দা প্রো বাক (৪১) বলেন,
“আমি সীমান্তের খুব কাছেই থাকি। আমরা ভয় পাচ্ছি। কোনো সময় যেন বোমা এসে পড়ে।”
চীনের উদ্বেগ ও আসিয়ানের ভূমিকা
চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই এ ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, “ক্ষয়ক্ষতি বেদনাদায়ক। দুই দেশকে আলোচনার মাধ্যমে সমাধানে পৌঁছাতে হবে।” এদিকে থাইল্যান্ডের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র জানিয়েছেন, মালয়েশিয়ার মধ্যস্থতায় তারা আলোচনায় প্রস্তুত। বর্তমানে আসিয়ানের চেয়ার দেশ হিসেবে মালয়েশিয়া ইতোমধ্যে উভয় পক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করছে।
পুরোনো বিরোধ নতুন রক্তপাত
উল্লেখ্য, ৮০০ কিলোমিটার দীর্ঘ সীমান্ত অঞ্চলটি নিয়ে দুই দেশের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছে। যদিও ২০১৩ সালে জাতিসংঘ আদালতের এক রায়ে পরিস্থিতি কিছুটা শান্ত হয়েছিল। তবে চলতি বছরের মে মাসে এক ক্যাম্বোডীয় সেনা নিহত হওয়ার পর ফের উত্তেজনা বাড়ে।
বৃহস্পতিবার ছয়টি এলাকায় তীব্র সংঘর্ষ হয়, যার মধ্যে দুটি প্রাচীন ঐতিহাসিক মন্দির-সংলগ্ন। থাই বিমান বাহিনী সেখানে এফ-১৬ জেট ব্যবহার করে প্রতিক্রিয়া জানায়। দুই পক্ষই প্রথম গুলি চালানোর দায় একে অপরের ওপর চাপাচ্ছে।
থাইল্যান্ড অভিযোগ করেছে, ক্যাম্বোডিয়া বেসামরিক স্থাপনাগুলোকেও টার্গেট করেছে, যার মধ্যে একটি হাসপাতাল ও একটি পেট্রোল স্টেশন রয়েছে।
📢 বিস্তারিত আন্তর্জাতিক আপডেট পেতে ভিজিট করুন: [www.dainikashulia.com]
📨 আপনার এলাকার আন্তর্জাতিক সংবাদ পাঠাতে ইমেইল করুন: worlddesk@dainikashulia.com
— শেষ —