📰 দৈনিক আশুলিয়া
🗓️ শনিবার, ২৬ জুলাই ২০২৫
📂 বিভাগ: ইসলাম ও সমাজ
✍️ প্রতিবেদক: নিজস্ব প্রতিনিধি
মহান আল্লাহর অফুরন্ত নিয়ামতের ভাণ্ডারে অন্যতম এক বিস্ময়কর উপহার হলো মাছ। এটি কেবলমাত্র একটি সুস্বাদু খাদ্য নয়, বরং পবিত্র কোরআনের আলোকে আল্লাহর কুদরতের এক গুরুত্বপূর্ণ নিদর্শন, যা মানবজাতির খাদ্য নিরাপত্তা, স্বাস্থ্য, চিকিৎসা, প্রযুক্তি এমনকি আন্তর্জাতিক অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে।
📖 কোরআনের দৃষ্টিতে মাছ
মহান আল্লাহ বলেন—
“তোমাদের জন্য হালাল করা হয়েছে সমুদ্রের শিকার ও তার খাদ্য; তোমাদের ও মুসাফিরদের ভোগের জন্য।”
(সূরা মায়িদা, আয়াত ৯৬)
আরও বলেন—
“আর তিনিই সে সত্তা, যিনি সমুদ্রকে নিয়োজিত করেছেন, যাতে তোমরা তা থেকে তাজা গোশত খেতে পার এবং তা থেকে অলংকারাদি বের করতে পার, যা তোমরা পরিধান করো…”
(সূরা নাহল, আয়াত ১৪)
এসব আয়াত নির্দেশ করে, মাছ শুধু আহারের বস্তু নয়; এটি মহান প্রভুর অসীম কুদরতের বহিঃপ্রকাশ।
💡 আধুনিক বিজ্ঞানেও মাছের বিস্ময়কর উপকারিতা
বিশ্বব্যাপী বিজ্ঞানীরা স্বীকার করছেন, মাছ শুধু প্রোটিন সমৃদ্ধ খাদ্য নয়, বরং এর প্রত্যেকটি অংশেই রয়েছে বিস্ময়কর উপযোগিতা।
✅ মাছের আঁশ:
মাছের আঁশে রয়েছে কোলাজেন নামক এক গুরুত্বপূর্ণ উপাদান, যা ব্যবহৃত হচ্ছে—
-
ফুড সাপ্লিমেন্ট
-
ওষুধ শিল্প
-
কসমেটিকস
-
ন্যানো জেনারেটর (চীন ও জাপানে)
এগুলি দিয়ে তৈরি হচ্ছে রিচার্জেবল ব্যাটারি, কৃত্রিম কর্নিয়া, এমনকি ঘরোয়া বিদ্যুৎ উৎপাদন প্রযুক্তি। বাংলাদেশ থেকেও মাছের আঁশ রপ্তানি করে বছরে আয় হচ্ছে শত কোটি টাকা।
✅ মাছের তেল ও কলিজা:
মাছের তেলে বিদ্যমান ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড মস্তিষ্কের কার্যকারিতা, স্মৃতিশক্তি উন্নয়ন ও হৃদরোগ প্রতিরোধে কার্যকর।
মাছের কলিজা ভিটামিন A, D এবং ওমেগা থ্রি-তে ভরপুর।
🔖 হাদিস শরিফে আছে:
“জান্নাতে প্রথম আপ্যায়ন করা হবে মাছের কলিজা দিয়ে।”
(সহিহ মুসলিম: ৬০৩)
✅ মাছের চামড়া:
সম্প্রতি ব্রাজিলের চিকিৎসকরা তেলাপিয়া মাছের চামড়া দিয়ে পোড়া রোগীর চিকিৎসায় যুগান্তকারী সফলতা পেয়েছেন। এটি নিয়ে বৈজ্ঞানিক গবেষণাও প্রকাশ পেয়েছে আন্তর্জাতিক জার্নালে।
🕋 এক আয়াতে আল্লাহ বলেন—
“তারা চিন্তা করে আসমান ও জমিনের সৃষ্টি নিয়ে এবং বলে, হে আমাদের রব! তুমি এসব অনর্থক সৃষ্টি করোনি, তুমি পবিত্র, আমাদের আগুনের শাস্তি থেকে রক্ষা করো।”
(সূরা আলে ইমরান, আয়াত ১৯১)
✨ উপসংহার:
মাছ শুধু দুনিয়ার ভোগ্যসম্পদ নয়, এটি আল্লাহর এক মহা রহমতের নিদর্শন। এর প্রতিটি অংশে রয়েছে মানুষের জন্য কল্যাণ ও আর্থিক সম্ভাবনা। মুসলিম হিসেবে আমাদের কর্তব্য হলো আল্লাহর এসব নেয়ামতের যথাযথ কদর করা, শুকরিয়া আদায় করা এবং তা ব্যবহার করে মানবকল্যাণে এগিয়ে আসা।