দৈনিক আশুলিয়া
🗓 রবিবার, ২৭ জুলাই ২০২৫ | ১১ সফর ১৪৪৭ হিজরি
নিজস্ব প্রতিবেদক
আজ শনিবার থেকে শুরু হয়েছে হিজরি সনের দ্বিতীয় মাস সফর। তবে এই মাস ঘিরে বহু আগে থেকেই সমাজে প্রচলিত রয়েছে নানা রকম কুসংস্কার ও ভুল বিশ্বাস। জাহেলি যুগের মানুষেরা সফর মাসকে অশুভ মনে করত এবং এ সময় কোনো বড় উদ্যোগ নিতে ভয় পেত। তারা বিয়েশাদি, ব্যবসা বা দূর সফর এড়িয়ে চলত নিছক কল্পিত অশুভ আশঙ্কার কারণে।
তবে ইসলাম এসব ধারণাকে ভিত্তিহীন বলে রদ করেছে। হাদিস শরিফে স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে—অশুভ লক্ষণ নির্ধারণ ইসলামে নিষিদ্ধ। সহিহ হাদিসে হজরত আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, “সংক্রামক রোগ বলতে কিছু নেই, কুলক্ষণ বলতে কিছু নেই, সফর মাসকে অশুভ মনে করা যাবে না এবং প্যাঁচা সম্পর্কে যেসব কথা প্রচলিত রয়েছে, তা-ও ভিত্তিহীন।” (আবু দাউদ, হাদিস : ৩৯১১)
এই হাদিসের প্রেক্ষিতে আলেমরা বলেন, রোগের সংক্রমণ বা দুর্ভাগ্য যেমন আল্লাহর ইচ্ছা ছাড়া কিছুই হতে পারে না, তেমনি সফর মাসকে ভয় পাওয়ারও কোনো কারণ নেই। বরং কুসংস্কার ও অন্ধবিশ্বাস থেকে দূরে থাকাই মুসলমানের জন্য কর্তব্য।
ইতিহাস ঘেঁটে দেখা যায়, আমাদের প্রিয় নবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) নিজেই এই সফর মাসে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। ২৫ বছর বয়সে তিনি খাদিজা (রা.)-এর সঙ্গে এই মাসেই বিবাহ সম্পন্ন করেন। শুধু তাই নয়, তাঁর প্রিয় কন্যা ফাতেমা (রা.)-এর বিবাহও এই মাসেই হজরত আলী (রা.)-এর সঙ্গে সংঘটিত হয়।
তথ্যসূত্র মতে, রাসুল (সা.)-এর চাচা আবু তালিব নিজে মোহরানা দিয়ে এই বিয়ের দায়িত্ব পালন করেন। আর ফাতেমা (রা.)-এর বিয়ে সংঘটিত হয় দ্বিতীয় হিজরির সফর মাসে। (সূত্র: সুবুলুল হুদা ওয়ার রাশাদ : ২/২৬৫; আস-সিরাহ আন-নববিয়্যাহ লিবনে কাসির : ৪/৬১১)
বর্তমানে অনলাইনের বিভিন্ন মাধ্যমে আবারো সফর কিংবা জুলাই মাসকে অলক্ষ্মী বলার প্রবণতা দেখা যাচ্ছে, যা ইসলামি চেতনার পরিপন্থী।
এ প্রসঙ্গে ইসলামিক চিন্তাবিদরা বলেন, “কোনো নির্দিষ্ট সময়কে ‘অলক্ষ্মী’ বলা ইসলামি আকিদার পরিপন্থী। মুসলমানের উচিত কুসংস্কারের চেয়ে যুক্তি, কুরআন ও হাদিসভিত্তিক চিন্তাকে গুরুত্ব দেওয়া।”
সফর মাস হোক আত্মশুদ্ধি ও অন্ধবিশ্বাস দূর করার একটি সুযোগ। মহান আল্লাহ আমাদের সবাইকে কুসংস্কার থেকে বেঁচে থাকার এবং বিশুদ্ধ দ্বীনি জ্ঞান অনুযায়ী চলার তাওফিক দিন—আমিন।
📞 যোগাযোগ: desk@dainikashulia.com
🌐 ওয়েবসাইট: www.dainikashulia.com
📰 অনুসন্ধানী সাংবাদিকতায় আপনার আস্থা