স্টাফ রিপোর্টার | সাতক্ষীরা | সোমবার, ২৬ মে ২০২৫
সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলায় অনুমোদনহীনভাবে পরিচালিত তিনটি করাত কলে (স-মিল) পরিবেশ অধিদপ্তর ও স্থানীয় প্রশাসনের যৌথ টাস্কফোর্স অভিযান পরিচালনা করেছে।
অভিযানে মিলগুলো থেকে আনুমানিক ৪৭ লাখ ৩৯ হাজার টাকা মূল্যের বিভিন্ন প্রজাতির গোল কাঠ জব্দ করা হয়। একইসঙ্গে পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র না থাকায় অবৈধভাবে পরিচালিত করাত কল তিনটিকে সিলগালা করে তাৎক্ষণিকভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়।
অভিযানকালে প্রতিটি স-মিলকে ১০ হাজার টাকা করে মোট ৩০ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয়।
অভিযান পরিচালনার বিবরণ
সোমবার সকাল থেকে কলারোয়ার বিভিন্ন এলাকায় পরিচালিত এ অভিযানে নেতৃত্ব দেন সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সুমনা নাহার। তার সঙ্গে পরিবেশ অধিদপ্তরের খুলনা অঞ্চলের সহকারী পরিচালক প্রকৌশলী আলমগীর কবির ও কলারোয়া উপজেলা বন বিভাগের কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।
অভিযানের সময় সংশ্লিষ্টরা জানান, দীর্ঘদিন ধরে এসব করাত কল কোনো অনুমোদন ছাড়াই গোপনে কাঠ কাটার কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছিল। এসব স-মিল পরিবেশ বিধিমালা লঙ্ঘন করে এবং সরকারের রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে বিপুল পরিমাণ কাঠ ব্যবসা চালিয়ে আসছিল বলে প্রাথমিক তদন্তে উঠে এসেছে।
পরিবেশ ও বনসম্পদ রক্ষায় কঠোর অবস্থান
অভিযান শেষে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সুমনা নাহার সাংবাদিকদের বলেন, “পরিবেশ সংরক্ষণ আইন অনুযায়ী কোনো করাত কল পরিচালনার জন্য পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র বাধ্যতামূলক। এই করাত কলগুলোর বিরুদ্ধে আগেও স্থানীয় পর্যায়ে অভিযোগ ছিল। আজকের অভিযানে কাঠ জব্দ ও জরিমানার পাশাপাশি আইনি প্রক্রিয়ায় পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।”
তিনি আরও বলেন, “অবৈধ স-মিল বন্ধে জেলা প্রশাসনের অভিযান অব্যাহত থাকবে। কোনোভাবেই বনজসম্পদ ধ্বংস ও পরিবেশ বিরোধী কার্যক্রম বরদাশত করা হবে না।”
স্থানীয়দের প্রতিক্রিয়া
স্থানীয় বাসিন্দারা এই অভিযানকে স্বাগত জানিয়েছেন। তারা বলেন, “দীর্ঘদিন ধরে অবৈধভাবে কাঠ কাটার কারণে এলাকায় গাছের সংখ্যা হ্রাস পাচ্ছিল। এসব মিল বন্ধ হওয়ায় পরিবেশ কিছুটা হলেও রক্ষা পাবে।”
ভবিষ্যৎ পদক্ষেপ
পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক প্রকৌশলী আলমগীর কবির জানান, “আমরা দেশের বিভিন্ন জেলায় নিয়মিতভাবে এ ধরনের অভিযান পরিচালনা করছি। কারও বিরুদ্ধে অনুমোদনহীনভাবে স-মিল পরিচালনার তথ্য পেলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
অবৈধ করাত কল ও বনসম্পদ ধ্বংসের বিরুদ্ধে এ ধরনের অভিযান পরিবেশ সংরক্ষণ ও সুশাসন প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে বলে মনে করছেন সচেতন মহল। প্রশাসন জানিয়েছে, ভবিষ্যতেও এ ধরনের অভিযান নিয়মিত চালিয়ে যাওয়া হবে।