📍 নিউইয়র্ক প্রতিনিধি:
গাজায় চলমান ইসরায়েলি বর্বরতার বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধের আহ্বান জানিয়ে ধর্মীয় মর্যাদা ও ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে শুক্রবার, ৬ জুন যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে উদযাপিত হয়েছে মুসলিম উম্মাহর অন্যতম পবিত্র ধর্মীয় উৎসব ঈদুল আজহা।
নিউইয়র্ক, ক্যালিফোর্নিয়া, ফ্লোরিডা, টেক্সাস, জর্জিয়া, পেনসিলভেনিয়া, নিউজার্সি, ভার্জিনিয়া, মিশিগানসহ প্রায় পঞ্চাশটি অঙ্গরাজ্যের তিন হাজারেরও বেশি মসজিদে অনুষ্ঠিত হয় ঈদের জামাত। প্রবাসী মুসলিমদের অংশগ্রহণে মসজিদগুলো মুখরিত হয়ে উঠে ধর্মীয় উৎসবের আবহে।
🕌 ঈদের জামাতে গাজাবাসীর জন্য দোয়া
নিউইয়র্কের জ্যামাইকা মুসলিম সেন্টার, ব্রঙ্কস মসজিদ, কুইন্স ইসলামিক সোসাইটি সহ বিভিন্ন স্থানে আয়োজিত ঈদের নামাজে হাজার হাজার মুসল্লি অংশ নেন। নামাজ শেষে বিশ্ব মুসলিম উম্মাহর ঐক্য এবং ফিলিস্তিনের নিরীহ জনগণের জন্য দোয়া করা হয়।
“গাজায় আমাদের ভাই-বোনেরা আজ ঈদের আনন্দ থেকে বঞ্চিত। আমরা তাদের পাশে আছি, থাকব ইনশাআল্লাহ।” — বলেন জামাত শেষে এক মুসল্লি, যিনি নিজেও ফিলিস্তিনি বংশোদ্ভূত।
✊ ঐক্যের ডাক ও প্রতিবাদী বার্তা
মুসলিম সম্প্রদায়ের নেতারা ঈদের খুতবায় গাজায় ইসরায়েলি দমন-পীড়নের তীব্র প্রতিবাদ জানান এবং মুসলিম বিশ্বকে রাজনৈতিক ও মানবিকভাবে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান।
ইমাম জাফর হোসাইন, ক্যালিফোর্নিয়ার একটি বড় ইসলামিক সেন্টারে বলেন,
“ঈদ কেবল উৎসব নয়, এটি ত্যাগের শিক্ষা দেয়। এই ত্যাগের চেতনা নিয়েই আমাদের গাজাসহ বিশ্বের নিপীড়িত মুসলমানদের পাশে দাঁড়াতে হবে।”
🎉 ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি
ঈদের জামাত শেষে মুসল্লিরা একে অপরের সঙ্গে কোলাকুলি ও শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। বিভিন্ন কমিউনিটি সেন্টারে আয়োজন করা হয় ঈদ মিলনমেলা, শিশুদের জন্য ছিল খেলনা ও মিষ্টির ব্যবস্থা, আর নারীদের জন্য ছিল আলাদা প্যাভিলিয়ন ও ঐতিহ্যবাহী খাবারের আয়োজন।
নিউইয়র্কের জ্যাকসন হাইটসে এক প্রবাসী বাংলাদেশি জানান,
“নিজ দেশ থেকে দূরে থাকলেও এখানে আমরা ঈদের আনন্দ একসঙ্গে ভাগাভাগি করে নেই। গাজায় যা হচ্ছে, সেটা আমাদের আনন্দকে নিস্তব্ধ করে দিয়েছে। কিন্তু প্রার্থনায় আমরা তাদের ভুলিনি।”
📸 পাল্লা দিয়ে মিডিয়া কভারেজ
এবারের ঈদ উদযাপনকে কেন্দ্র করে যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় ও জাতীয় মিডিয়াগুলো মুসলিমদের শান্তিপূর্ণ ধর্মীয় আবেগ ও গাজা সংকট নিয়ে প্রতিবাদী বার্তা গুরুত্ব দিয়ে প্রচার করেছে।
বিশেষ দৃষ্টিকোণ:
একদিকে ধর্মীয় উৎসব, অন্যদিকে মধ্যপ্রাচ্যের সংকট—এই দুই বিপরীত বাস্তবতায় ঈদুল আজহার এ বছরের উদযাপন ছিল ভিন্নতর। যুক্তরাষ্ট্রের প্রবাসী মুসলমানদের ঐক্যবদ্ধ বার্তা আন্তর্জাতিক মহলে মানবিক সাড়া জাগানোর আশা রাখে।