নিজস্ব প্রতিবেদক:
মানুষের চরিত্র, আচার-আচরণ ও গুণাবলির ওপর ভিত্তি করে মহান আল্লাহ কাউকে ভালোবাসেন, আবার কাউকে অপছন্দ করেন। পবিত্র কোরআনে বেশ কিছু আয়াতে এ বিষয়ে সুস্পষ্টভাবে বর্ণনা করা হয়েছে—যেসব গুণের অধিকারী মানুষ আল্লাহর প্রিয়, আবার কিছু দোষ আছে, যা আল্লাহর নিকট ঘৃণিত।
এ প্রসঙ্গে মহান আল্লাহ বলেন—
“নিশ্চয়ই আল্লাহ সৎকর্মশীলদের ভালোবাসেন।”
(সূরা আল-বাকারা, আয়াত ১৯৫)
❤️ আল্লাহ যাদের ভালোবাসেন:
🔹 তাওবা কারী ও পবিত্রতা রক্ষাকারী
“নিশ্চয়ই আল্লাহ তাওবাকারীদের ভালোবাসেন এবং তিনি পবিত্রতা অবলম্বনকারীদের ভালোবাসেন।”
(সূরা আল-বাকারা, আয়াত ২২২)
🔹 সাবর (ধৈর্যশীল) ব্যক্তিরা
“আল্লাহ তো ধৈর্যশীলদের ভালোবাসেন।”
(সূরা আল-ইমরান, আয়াত ১৪৬)
🔹 তাকওয়াবান (আল্লাহভীরু) মানুষ
“নিশ্চয়ই আল্লাহ পরহেযগারদের ভালোবাসেন।”
(সূরা আত-তাওবা, আয়াত ৪)
🔹 ন্যায়পরায়ণ মানুষ
“নিশ্চয়ই আল্লাহ ন্যায়পরায়ণদের ভালোবাসেন।”
(সূরা আল-মায়েদা, আয়াত ৪২)
🔹 তawakkul কারী (আল্লাহর ওপর ভরসা করা লোক)
“আল্লাহ তাদের ভালোবাসেন যারা তাঁর উপর ভরসা করে।”
(সূরা আলে ইমরান, আয়াত ১৫৯)
⚠️ আল্লাহ যাদের ভালোবাসেন না:
🔸 সীমালংঘনকারী
“নিশ্চয়ই আল্লাহ সীমালংঘনকারীদের ভালোবাসেন না।”
(সূরা আল-বাকারা, আয়াত ১৯০)
🔸 ফাসাদ সৃষ্টিকারী ও অহংকারী
“আল্লাহ দুর্নীতিপরায়ণদের এবং অহংকারকারীদের ভালোবাসেন না।”
(সূরা আল-কাসাস, আয়াত ৭৭)
🔸 অবিশ্বাসী ও বিশ্বাসভঙ্গকারীরা
“নিশ্চয়ই আল্লাহ বিশ্বাসঘাতকদের ভালোবাসেন না।”
(সূরা আল-আনফাল, আয়াত ৫৮)
🔸 অপচয়কারীরা
“নিশ্চয়ই অপচয়কারীরা শয়তানের ভাই, আর শয়তান ছিল তার প্রতিপালকের প্রতি অকৃতজ্ঞ। আল্লাহ অপচয়কারীদের ভালোবাসেন না।”
(সূরা আল-আরাফ, আয়াত ৩১)
📖 হাদিসের আলোকে শিক্ষা:
রাসূল (সা.) বলেন,
“আল্লাহ তাআলা বলেন, আমি তাঁর সঙ্গে যুদ্ধ করি, যে আমার কোনো ওয়ালির (প্রিয় বান্দার) বিরুদ্ধে শত্রুতা করে।”
(সহিহ বুখারি)
তিনি আরও বলেন,
“তোমরা ভালোবাস আল্লাহকে, কারণ তিনি তোমাদের রিজিক দিয়েছেন; আর আমাকে ভালোবাস আল্লাহর ভালোবাসার জন্য।”
(তিরমিজি)
🔚 উপসংহার:
মানুষের জীবনধারা ও অভ্যাসই নির্ধারণ করে সে আল্লাহর প্রিয় না অপ্রিয়। পবিত্র কোরআন ও সহিহ হাদিসে যে গুণাবলিকে আল্লাহ ভালোবাসেন, তা নিজের জীবনে ধারণ করা ও যেসব দোষ থেকে তিনি বিরক্ত, তা পরিহার করাই প্রকৃত মুমিনের পরিচয়।