নিজস্ব প্রতিবেদক:
বর্তমান সময়ে দেশের বিভিন্ন এলাকায় তীব্র গরম বিরাজ করছে। এই অস্বাভাবিক গরম শুধু মানুষের শারীরিক দুর্ভোগের কারণ নয়, বরং প্রাণীকুল, কৃষি উৎপাদন এবং অর্থনৈতিক কার্যক্রমেও ফেলছে নেতিবাচক প্রভাব। জলবায়ুর এই পরিবর্তনকে কেন্দ্র করে ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে একজন মুমিনের করণীয় কী—তা তুলে ধরেছেন ইসলামি চিন্তাবিদরা।
জীবজগতের ওপর গরমের প্রভাব
গরমের কারণে মানুষ যেমন অসুস্থ হয়ে পড়ছে, তেমনি গবাদিপশু ও বন্যপ্রাণীরাও অতিরিক্ত গরমে কষ্ট পাচ্ছে। তাপদাহে খাদ্যশস্যের উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে, যা সরাসরি দেশের খাদ্যনিরাপত্তায় প্রভাব ফেলতে পারে। কৃষি বিশেষজ্ঞরা বলছেন, চলমান গরমে ধানসহ বিভিন্ন ফসলের ফলনে নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে।
ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে গরমের সময় করণীয়
ইসলামের দৃষ্টিতে প্রাকৃতিক দুর্যোগ বা প্রতিকূল আবহাওয়াও আল্লাহর কুদরত ও পরীক্ষা। কুরআনে ইরশাদ হয়েছে—
“আর আমরা অবশ্যই তোমাদের পরীক্ষা করব কিছুটা ভয়, ক্ষুধা, ধন-সম্পদ, প্রাণ ও ফলফলাদির ক্ষয়ক্ষতির মাধ্যমে। আর তুমি সুসংবাদ দাও ধৈর্যশীলদের।”
—(সূরা আল-বাকারা, আয়াত: ১৫৫)
প্রচণ্ড গরমে ধৈর্য ও আল্লাহর উপর ভরসা রাখা মুমিনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। হাদীসে এসেছে,
“তাপপ্রবাহ জাহান্নামের নিঃশ্বাস।”
—(সহিহ বুখারী: ৫৩৭)
অতএব, এই সময় বেশি বেশি ইস্তিগফার, দোআ ও নামাজে মনোনিবেশ করা উচিত। রাসুল (সা.) গরমে নামাজ সংক্ষিপ্ত করতেন এবং সাহাবিদেরও কষ্ট হলে তা করতে বলতেন।
মুমিনের জন্য কিছু করণীয়
-
বেশি করে দোআ ও ইস্তিগফার করা
-
খোলা স্থানে অকারণে না বের হওয়া
-
গরিব ও দুর্বলদের পানির ব্যবস্থা করা (এটি সদকার অন্তর্ভুক্ত)
-
গরমে আক্রান্তদের সাহায্য করা
-
গবাদিপশু ও পাখিদের জন্য পানির ব্যবস্থা করা
উপসংহার
প্রাকৃতিক দুর্যোগ বা আবহাওয়ার বৈরিতা থেকে শিক্ষা নেওয়া এবং আল্লাহর প্রতি অধিকতর নিবেদিত হওয়াই হলো মুমিনের পরিচয়। গরমের এ সময়ে মানবিকতা, সহানুভূতি এবং আখিরাতের কথা মনে রেখে জীবন পরিচালনা করাই উত্তম পথ।
আসুন, সবাই মিলে দোআ করি—আল্লাহ যেন আমাদের এই গরম থেকে হেফাজত করেন এবং তার রহমত দিয়ে আমাদের দেশে বরকত দান করেন।