নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে থাকা বহু নারী-শিশুর ওপর নেমে আসে মৃত্যু
📅 প্রকাশিত: সোমবার, ২৬ মে ২০২৫
🌍 আন্তর্জাতিক ডেস্ক
অবরুদ্ধ ফিলিস্তিনি ভূখণ্ড গাজায় এক মর্মান্তিক বোমা হামলায় কেঁপে উঠেছে পুরো অঞ্চল। সোমবার (২৬ মে) ভোরে ইসরায়েলি বাহিনী একটি স্কুল ভবনে বিমান হামলা চালায়, যা আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছিল। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার বরাতে জানা গেছে, এই হামলায় এখন পর্যন্ত কমপক্ষে ১৯ জন বেসামরিক ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।
স্থানীয় সূত্র ও মানবাধিকার সংস্থাগুলোর তথ্য অনুযায়ী, হামলার শিকার স্কুলটিতে বহু নারী, শিশু ও বৃদ্ধ নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে অবস্থান করছিলেন। বিস্ফোরণের তীব্রতায় ভবনের একটি অংশ ধসে পড়ে এবং ধ্বংসস্তূপের নিচে অনেকেই আটকা পড়ে যান। নিহতদের মধ্যে শিশুর সংখ্যাই বেশি বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
আতঙ্ক ও আর্তনাদে প্রকম্পিত আশ্রয়কেন্দ্র
হামলার সময় আশ্রয়কেন্দ্রটিতে থাকা এক বাসিন্দা জানান, “আমরা ভেবেছিলাম এখানে অন্তত নিরাপদ থাকব। হঠাৎ করেই বিকট শব্দে সব কিছু উড়ে যায়। আমার চোখের সামনে শিশুরা ছিটকে পড়ে। রক্ত আর ধ্বংস ছাড়া কিছুই অবশিষ্ট নেই।”
আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলোর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, হামলার পর পরই ঘটনাস্থলে পৌঁছে যায় উদ্ধারকারী দল ও স্থানীয় বাসিন্দারা। আহতদের উদ্ধার করে স্থানীয় চিকিৎসা কেন্দ্রে নেওয়া হলেও পর্যাপ্ত চিকিৎসা সরঞ্জাম না থাকায় অনেকের জীবন রক্ষা করা সম্ভব হয়নি।
আন্তর্জাতিক মহলের উদ্বেগ
গাজায় চলমান সহিংসতার মধ্যে এই ধরণের হামলা আন্তর্জাতিক মানবিক আইন লঙ্ঘনের শামিল বলে অভিযোগ তুলেছে বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থা। তারা বলছে, আশ্রয়কেন্দ্র বা হাসপাতালের মতো নিরপেক্ষ ও নিরাপদ স্থানে হামলা করা স্পষ্টতই যুদ্ধাপরাধ।
জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক রেড ক্রস ইতোমধ্যে হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে। মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস ওয়াচ এক বিবৃতিতে বলেছে, “এই হামলা বেসামরিক জনগণের নিরাপত্তা ও মানবাধিকারের চূড়ান্ত অবমাননা। অবিলম্বে একটি নিরপেক্ষ ও স্বচ্ছ তদন্ত জরুরি।”
ইসরায়েলের অবস্থান
ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত হামলার বিষয়টি নিয়ে আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। তবে সাম্প্রতিক সময়ে তারা গাজায় হামাসের অবস্থান লক্ষ্য করে ধারাবাহিক অভিযান চালাচ্ছে বলে দাবি করেছে। তবে বেসামরিক স্থাপনায় হামলার ঘটনা নিয়ে ব্যাপক আন্তর্জাতিক সমালোচনা রয়েছে।
বিশ্লেষণ:
গাজায় চলমান সংকট ক্রমেই ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় বারবার যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানালেও সংঘাত থামার কোনো ইঙ্গিত দেখা যাচ্ছে না। এ অবস্থায় সবচেয়ে বেশি ভুগছে বেসামরিক জনগণ, বিশেষ করে নারী ও শিশু।