স্টাফ রিপোর্টার | পটুয়াখালী | রবিবার, ২৫ মে ২০২৫
কুয়াকাটা সংলগ্ন বঙ্গোপসাগরে আন্ধারমানিক নদীর মোহনায় মাছ ধরার নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে মাছ শিকার করায় ২৭ জন জেলেকে আটক করেছে বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড। একই অভিযানে জব্দ করা হয়েছে ৫টি মাছধরা ট্রলারও।
রবিবার (২৫ মে) বিকেলে নিষেধাজ্ঞা কার্যকরের অংশ হিসেবে নিয়মিত টহল চালানোর সময় এ অভিযান পরিচালনা করা হয়।
নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে সাগরে জাল ফেলেন জেলেরা
কোস্ট গার্ডের দক্ষিণ জোন (মোংলা) সূত্র জানায়, সামুদ্রিক মাছের প্রজনন মৌসুমে সরকারের পক্ষ থেকে ঘোষিত ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা চলমান থাকলেও, কিছু জেলে নিয়ম ভেঙে সাগরে গিয়ে মাছ ধরার চেষ্টা চালাচ্ছিলেন।
রবিবার বিকেলে কোস্ট গার্ডের একটি বিশেষ টহল দল আন্ধারমানিক নদীর মোহনায় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান পরিচালনা করে। অভিযানে পাঁচটি মাছধরা ট্রলারকে আটক করা হয়, যেগুলোর মধ্যে ২৭ জন জেলে নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে জাল ফেলছিলেন।
আটককৃতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা
আটককৃত জেলেদের নাম-ঠিকানা যাচাই-বাছাই চলছে। অভিযানে অংশ নেওয়া কোস্ট গার্ড কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কমান্ডার ফাহিম হাসান জানান, “সরকারি নির্দেশনা অমান্য করে সাগরে মাছ ধরার কারণে আটককৃতদের বিরুদ্ধে মৎস্য সংরক্ষণ আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”
তিনি আরও বলেন, “সামুদ্রিক মাছের সুষ্ঠু প্রজনন নিশ্চিত করতে এই নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। কিছু জেলে নিজেদের স্বার্থে তা অমান্য করায় সরকার ঘোষিত উদ্যোগ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।”
প্রজনন মৌসুমে ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা
উল্লেখ্য, প্রতি বছর মার্চ-জুলাই মাসের মধ্যে ৬৫ দিনের জন্য বঙ্গোপসাগরে সবধরনের মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা জারি করে সরকার। এ সময় মাছের ডিম ছাড়ার সময় হওয়ায় সাগরে ট্রলার নিয়ে যাওয়া বা জাল ফেলাও সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।
এই নিষেধাজ্ঞার আওতায় উপকূলীয় জেলা পটুয়াখালী, বরগুনা, ভোলা, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারে নিয়মিত নজরদারি ও টহল চালায় কোস্ট গার্ড, নৌবাহিনী ও মৎস্য বিভাগ।
স্থানীয়দের প্রতিক্রিয়া
স্থানীয় মৎস্যজীবী সংগঠন ও সচেতন মহল কোস্ট গার্ডের এই পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়েছেন। তারা বলেন, “অল্প সময়ের লাভের আশায় কিছু অসাধু জেলে সাগরে নামলে পুরো অঞ্চলের মাছের উৎপাদন হুমকির মুখে পড়ে। তাই এ ধরনের অভিযান আরও জোরদার করা দরকার।”
কোস্ট গার্ডের হুঁশিয়ারি
কোস্ট গার্ড দক্ষিণ জোন জানিয়েছে, নিষেধাজ্ঞা চলাকালীন যেকোনো ধরনের মাছ ধরা বা ট্রলার সাগরে পাঠানো সম্পূর্ণ বেআইনি। ভবিষ্যতে এ ধরনের কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে আরও কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
সামুদ্রিক সম্পদ রক্ষায় সরকার ঘোষিত নিষেধাজ্ঞা মানা সবার নাগরিক দায়িত্ব। প্রশাসন ও স্থানীয় জনগণের সম্মিলিত সচেতনতায়ই সম্ভব পরিবেশবান্ধব মৎস্য খাত গড়ে তোলা।