স্টাফ রিপোর্টার | গোপালগঞ্জ | সোমবার, ২৬ মে ২০২৫
মৎস্য সম্পদ ও জলজ জীববৈচিত্র্য রক্ষায় গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া উপজেলার গোপালপুর বিলে পরিচালিত বিশেষ অভিযানে প্রায় সাড়ে ৫ হাজার মিটার অবৈধ চায়না দুয়ারী জাল উদ্ধার করে পুড়িয়ে ধ্বংস করেছে উপজেলা প্রশাসন ও মৎস্য অধিদপ্তর। সোমবার (২৬ মে) সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত চলে এই যৌথ অভিযান।
অভিযান পরিচালনা করেন টুঙ্গিপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জয়নাল আবেদীন ও উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মামুন।
অভিযানে উদ্ধার ও ধ্বংস
গোপালপুর বিলে দীর্ঘদিন ধরেই কিছু অসাধু ব্যক্তি নিষিদ্ধ চায়না দুয়ারী জাল দিয়ে অবৈধভাবে মাছ শিকার করে আসছিল বলে স্থানীয়দের অভিযোগ ছিল। আজকের অভিযানে সেই তথ্যের ভিত্তিতেই বিলজুড়ে তল্লাশি চালিয়ে আনুমানিক ৫ হাজার ৫০০ মিটার চায়না দুয়ারী জাল জব্দ করা হয়, যার বাজারমূল্য প্রায় ৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা।
পরবর্তীতে উদ্ধারকৃত জালগুলো বিলপাড়ে নিয়ে এনে প্রকাশ্যে আগুনে পুড়িয়ে ধ্বংস করা হয়।
প্রশাসনের বক্তব্য
টুঙ্গিপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জয়নাল আবেদীন বলেন, “প্রাকৃতিক জলাশয় রক্ষা এবং মাছের সুষ্ঠু প্রজনন নিশ্চিত করতে অবৈধ জাল ব্যবহার সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। আজকের অভিযান ছিল আমাদের নিয়মিত নজরদারির অংশ। যারা নিয়ম ভেঙে পরিবেশবিরোধী কার্যকলাপ করছে, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, “চায়না দুয়ারী জাল অত্যন্ত ক্ষতিকর। এতে ছোট মাছ, ডিমওয়ালা মাছ এমনকি জলজ পোকামাকড় পর্যন্ত ধ্বংস হয়ে যায়। ফলে প্রাকৃতিক ভারসাম্য ও মাছের উৎপাদন মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এ কারণে এই জাল সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ এবং এর বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত থাকবে।”
স্থানীয়দের প্রতিক্রিয়া
অভিযান শেষে স্থানীয় জেলেরা প্রশাসনের এ পদক্ষেপকে স্বাগত জানান। তারা বলেন, “কিছু অসাধু জেলের কারণে আমরা বৈধভাবে মাছ ধরেও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছিলাম। এখন অভিযান হওয়ায় আমরা কিছুটা স্বস্তিতে ফিরছি।”
ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা
উপজেলা প্রশাসন জানিয়েছে, এমন অভিযান ভবিষ্যতেও নিয়মিতভাবে পরিচালনা করা হবে। জনসচেতনতা বাড়াতে স্থানীয় মসজিদ, বাজার এবং ঘাট এলাকায় প্রচার চালানো হবে।
অবৈধ জাল অপসারণের মাধ্যমে মাছের নিরাপদ প্রজনন নিশ্চিত করা গেলে দেশে মৎস্য উৎপাদন ও খাদ্য নিরাপত্তা এক ধাপ এগিয়ে যাবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। প্রশাসন ও জনগণের সমন্বিত চেষ্টায় গড়ে উঠতে পারে পরিবেশবান্ধব ও টেকসই মৎস্য খাত।