গোমস্তাপুর উপজেলার বিভিষণ সীমান্ত দিয়ে সকালেই ঘটে এই ঘটনা
নিজস্ব প্রতিবেদক, চাঁপাইনবাবগঞ্জ:
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) নারী ও শিশুসহ ১৭ বাংলাদেশিকে পুশইন করেছে। মঙ্গলবার (২৭ মে) সকালে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার গোমস্তাপুর উপজেলার বিভিষণ সীমান্ত দিয়ে এই পুশইনের ঘটনা ঘটে। দিনভর আলোচনা ও উত্তেজনার পর সন্ধ্যায় বিষয়টি নিশ্চিত করেন নওগাঁর ১৬ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ আরিফুল ইসলাম মাসুম ও গোমস্তাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জাকির মুন্সী।
পুশইনকৃতদের মধ্যে ৯ জন নারী, ৪ জন শিশু এবং ৪ জন পুরুষ রয়েছেন। তাদের সকলেই বাংলাদেশি নাগরিক বলে প্রাথমিকভাবে নিশ্চিত হওয়া গেছে। তবে কীভাবে তারা ভারতে গিয়েছিলেন, সে বিষয়ে তদন্ত চলছে।
বিজিবির কড়া অবস্থান
ঘটনার পরপরই সীমান্ত এলাকায় টহল জোরদার করে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। বিজিবির একজন কর্মকর্তা জানান, “এভাবে বিনা নোটিশে পুশইন আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘনের শামিল। আমরা প্রতিবাদ জানিয়েছি এবং কূটনৈতিক পর্যায়ে বিষয়টি তোলা হবে।”
প্রশাসনের অবস্থান
গোমস্তাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাকির মুন্সী বলেন, “সীমান্ত এলাকায় অনুপ্রবেশ, পুশইন বা মানবপাচার রোধে আমরা কঠোর নজরদারিতে আছি। পুশইনকৃতদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ ও মানবিক সহায়তা দেওয়া হয়েছে। প্রয়োজনীয় যাচাই-বাছাই শেষে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
আন্তর্জাতিক নিয়ম উপেক্ষা?
বিশ্লেষকরা বলছেন, এভাবে কোনো আগাম নোটিশ বা দুই দেশের যৌথ আলোচনার বাইরে পুশইনের ঘটনা আন্তর্জাতিক রীতিনীতি ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের পর্যায়ে পড়ে। অতীতেও ভারতের বিএসএফ একই ধরনের আচরণ করেছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
মানবিক সংকটের আশঙ্কা
স্থানীয় মানবাধিকার সংগঠনগুলোর দাবি, সীমান্ত এলাকায় বারবার পুশইন ও সীমান্তজুড়ে অনিরাপত্তা মানুষকে আতঙ্কিত করছে। তারা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন, “এই পরিস্থিতিতে নারী ও শিশুরা সবচেয়ে বেশি ভুক্তভোগী হয়ে পড়ছে।”
বিশেষ তথ্য:
-
১৭ জনের মধ্যে ৪ জন শিশুর বয়স ৫ বছরের নিচে
-
পুশইনকৃতদের অধিকাংশই নওগাঁ ও রাজশাহীর বাসিন্দা বলে ধারণা
-
জেলা প্রশাসন ও বিজিবি যৌথ তদন্ত কমিটি গঠনের উদ্যোগ নিয়েছে
আরও পড়ুন
-
সীমান্তে গুলিতে নিহত রোহিঙ্গা যুবক: বিজিবি-বিএসএফ পতাকা বৈঠক
-
ভারতে আটকেপড়া বাংলাদেশিদের ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ
-
মানবপাচার প্রতিরোধে সীমান্তে নতুন প্রযুক্তি স্থাপন শুরু