📍 আন্তর্জাতিক ডেস্ক | সূত্র: আনাদোলু এজেন্সি
ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে ইসরায়েলি বাহিনীর অব্যাহত বিমান ও স্থল হামলায় প্রতিদিন বাড়ছে নিহতের সংখ্যা। গত ২৪ ঘণ্টায় ইসরায়েলি বর্বর হামলায় কমপক্ষে আরও ৬০ জন ফিলিস্তিনি প্রাণ হারিয়েছেন। আহত হয়েছেন অন্তত ৩০০ জন।
এই নিয়ে ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে চলমান আগ্রাসনে গাজা উপত্যকায় মোট নিহতের সংখ্যা প্রায় ৫৪ হাজার ৪০০ জনে পৌঁছেছে, যার বেশিরভাগই নারী ও শিশু।
💣 দিনরাত বোমাবর্ষণ, ধ্বংসস্তুপে পরিণত ঘরবাড়ি
স্থানীয় সময় শুক্রবার রাত থেকে শনিবার সকাল পর্যন্ত ইসরায়েলি ড্রোন ও যুদ্ধবিমান একযোগে গাজার খান ইউনুস, রাফা ও দেইর আল-বালাহ এলাকায় একাধিকবার বিমান হামলা চালায়। লক্ষ্যবস্তু করা হয় আবাসিক ভবন, উদ্বাস্তু শিবির ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান।
ধ্বংসস্তূপের নিচে এখনো অনেক মানুষ চাপা পড়ে আছেন বলে স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবী ও চিকিৎসাকর্মীরা জানিয়েছেন। পর্যাপ্ত উদ্ধার সরঞ্জামের অভাবে অনেকের প্রাণ বাঁচানো যাচ্ছে না।
🏥 চিকিৎসা সেবায় ভয়াবহ সংকট
গাজায় বিদ্যমান স্বাস্থ্যব্যবস্থা প্রায় সম্পূর্ণরূপে ভেঙে পড়েছে। হাসপাতালে ওষুধ, অক্সিজেন, পানীয় জল, এমনকি ব্যান্ডেজেরও তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। স্বাস্থ্যকর্মীরা জীবন বাজি রেখে আহতদের সেবা দিচ্ছেন, কিন্তু প্রতিদিনের ভয়াবহতা সামাল দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না।
👩👧👦 নারী-শিশুদের দুর্ভোগ চরমে
জাতিসংঘের শিশু সংস্থা ইউনিসেফ জানায়, গাজায় প্রতিদিন গড়ে ৪০-৫০ জন শিশু নিহত হচ্ছে। বিস্ফোরণে হাত-পা হারাচ্ছে শিশুরা, কেউ হারাচ্ছে বাবা-মা। এক শিশুর ভাষ্যে, “আমি শুধু বিস্ফোরণ শুনি, এরপর সব কিছু অন্ধকার। মাকে আর খুঁজে পাই না।”
🌍 আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া ও নীরবতা
ইসরায়েলি হামলার নিন্দা জানিয়েছে তুরস্ক, দক্ষিণ আফ্রিকা, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়াসহ কয়েকটি মুসলিমপ্রধান দেশ। তবে জাতিসংঘসহ পশ্চিমা বিশ্ব এখনো কার্যকর পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থ হয়েছে বলে দাবি করেছেন বিশ্লেষকরা।
মধ্যপ্রাচ্য বিশ্লেষক ড. নওশাদ কবির বলেন, “এই পরিস্থিতি মানবতাবিরোধী অপরাধের শামিল। বিশ্ব সম্প্রদায়ের নিরবতা কার্যত ইসরায়েলের আগ্রাসনকে প্রকারান্তরে বৈধতা দিচ্ছে।”
🕊️ ফিলিস্তিনিদের আকুতি: শান্তি চান, স্বাধীনতা চান
গাজায় এখন শুধু ধ্বংস, রক্ত আর কান্নার সুর। ফিলিস্তিনিরা একটাই দাবি জানাচ্ছেন— “আমাদের বাঁচতে দিন, আমাদের স্বাধীনতা দিন।”
📌 উপসংহার:
ফিলিস্তিনে ইসরায়েলি বাহিনীর হামলা যতদিন চলবে, ততদিন বাড়তেই থাকবে লাশের মিছিল। মানবতা আজ প্রশ্নের মুখে, আর ইতিহাস এক ভয়ংকর অধ্যায়ের সাক্ষী হয়ে থাকছে।