📅 গাজা, সোমবার, ২ জুন ২০২৫
— আন্তর্জাতিক ডেস্ক
ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ত্রাণ সহায়তা নিতে আসা শত শত ক্ষুধার্ত ও অনাহারি মানুষের ওপর ইসরায়েলি বাহিনী এলোপাতাড়ি গুলি চালালে কমপক্ষে ৫০ জন নিহত এবং আরও অন্তত ২০০ জন গুরুতর আহত হয়েছেন। হতাহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এই মর্মান্তিক ঘটনার তথ্য নিশ্চিত করেছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, সোমবার সকালবেলা গাজার কেন্দ্রীয় অঞ্চলে একটি ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রে হাজার হাজার মানুষ জড়ো হন। অনাহারে কষ্ট পাওয়া মানুষগুলো শান্তিপূর্ণভাবে লাইনে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করছিলেন ত্রাণ সহায়তার জন্য। হঠাৎই ইসরায়েলি সেনাবাহিনী কোনো ধরনের সতর্কতা ছাড়াই গুলি চালানো শুরু করে।
ত্রাণ নয়, মৃত্যু বয়ে আনলো গুলি
স্থানীয় মানবাধিকার কর্মী মুহাম্মদ আবু সামাহ বলেন, “মানুষ খাবার নিতে এসেছিল, হাতে কোনো অস্ত্র ছিল না। হঠাৎই গুলির শব্দ। মাটিতে লুটিয়ে পড়ে নারী, শিশু, বৃদ্ধ। কিছু বুঝে ওঠার আগেই যেন কিয়ামত নেমে আসে।”
চোখের সামনে স্বজনকে হারিয়ে শোকে মুহ্যমান এক ফিলিস্তিনি মা বলেন, “আমার ছেলে খাবার আনতে গিয়েছিল, ফিরে এসেছে লাশ হয়ে।”
নিরাপত্তাহীনতায় ত্রাণ কার্যক্রম বন্ধ হওয়ার শঙ্কা
গাজার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মুখপাত্র ড. আশরাফ আল কুদরা জানান, “আহতদের মধ্যে অনেকের অবস্থা আশঙ্কাজনক। প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সরঞ্জাম ও ওষুধের ঘাটতির কারণে প্রাণহানি বাড়তে পারে।” তিনি আরও বলেন, ইসরায়েলি হামলার কারণে অনেক আন্তর্জাতিক সংস্থা তাদের ত্রাণ কার্যক্রম স্থগিত করতে বাধ্য হয়েছে।
জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক মহলের নিন্দা
ঘটনার পরপরই জাতিসংঘ, আন্তর্জাতিক রেড ক্রস, হিউম্যান রাইটস ওয়াচসহ বিভিন্ন সংস্থা এ হামলার নিন্দা জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছে। জাতিসংঘের মানবাধিকার হাইকমিশনার ভলকার টার্ক বলেন, “ত্রাণের জন্য আসা সাধারণ মানুষের ওপর গুলি চালানো মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন। এর দায় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এড়াতে পারে না।”
ইসরায়েলের দাবি অস্বীকার, তদন্তের আহ্বান
অন্যদিকে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী দাবি করেছে, তারা “উসকানিমূলক কার্যক্রমে অংশ নেওয়া সন্ত্রাসীদের” লক্ষ্য করে অভিযান পরিচালনা করছিল। তবে স্বাধীন পর্যবেক্ষক সংস্থাগুলো ইসরায়েলের এই দাবি প্রত্যাখ্যান করেছে এবং ঘটনাটির স্বাধীন আন্তর্জাতিক তদন্ত দাবি করেছে।