নিজস্ব প্রতিবেদক | ১৮ মে ২০২৫
ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে আলোচনার অংশ হিসেবে সোমবার (১৯ মে) রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলবেন বলে জানিয়েছেন সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ও রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প। নিজস্ব সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে দেওয়া এক পোস্টে তিনি এ ঘোষণা দেন। ট্রাম্প বলেছেন, এই ফোনালাপ হবে ‘রক্তপাত বন্ধ করার’ একটি প্রচেষ্টা।
সোমবার সকাল ১০টায় ফোনালাপ
ট্রাম্প জানিয়েছেন, ফোনালাপটি সোমবার (স্থানীয় সময়) সকাল ১০টায় অনুষ্ঠিত হবে। পুতিনের সঙ্গে আলোচনার পর তিনি ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি এবং ন্যাটোর কয়েকটি সদস্য দেশের নেতাদের সঙ্গেও কথা বলবেন।
বিশ্লেষকদের মতে, এই ফোনালাপ যুদ্ধবিরতির পথে কোনো অগ্রগতি বয়ে আনতে পারে কি না, তা এখনই বলা না গেলেও এটি একটি ‘গুরুত্বপূর্ণ কূটনৈতিক ইঙ্গিত’ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
তুরস্কে আলোচনা, অগ্রগতি হয়নি
গত শুক্রবার যুদ্ধের তিন বছরে প্রথমবারের মতো তুরস্কের ইস্তাম্বুলে সরাসরি বৈঠকে বসেছিল রাশিয়া ও ইউক্রেনের প্রতিনিধিদল। তবে বৈঠকে উল্লেখযোগ্য কোনো অগ্রগতি না হলেও, দুই পক্ষ বন্দি বিনিময়ের বিষয়ে সম্মত হয়েছে।
বৈঠকের আগে ট্রাম্প জানিয়েছিলেন, পুতিন সেখানে উপস্থিত থাকলে তিনিও ওই বৈঠকে অংশ নিতে আগ্রহী ছিলেন। কিন্তু রুশ প্রেসিডেন্ট বৈঠকে অংশ না নেওয়ায় তা সম্ভব হয়নি।
‘আমি থাকলে যুদ্ধ থামানো যেত’ — ট্রাম্পের দাবি
ডোনাল্ড ট্রাম্প একাধিকবার প্রকাশ্যে দাবি করেছেন, তিনি প্রেসিডেন্ট থাকলে ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুই হতো না। সম্প্রতি দেওয়া এক বক্তব্যে তিনি বলেন, “এই যুদ্ধে লাখো মানুষের প্রাণ গেছে, ধ্বংস হয়েছে শহর, অর্থনীতি ভেঙে পড়েছে। পুতিন এবং আমি একসঙ্গে বসলে দ্রুত সমাধান সম্ভব।”
তিনি আরও বলেন, “জেলেনস্কি ও ইউরোপীয় নেতাদের সঙ্গেও আলোচনা করব। আমি চাই, যুদ্ধ বন্ধ হোক। রক্তপাত থামুক।”
নির্বাচনী রাজনীতির অংশ?
ট্রাম্পের এই উদ্যোগকে অনেকে ২০২৪ সালের মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনকে কেন্দ্র করে তার রাজনৈতিক অবস্থান জোরদারের কৌশল হিসেবেও দেখছেন। ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রশাসনের অবস্থান ও সামরিক সহায়তা নীতির সমালোচনায় ট্রাম্প বরাবরই সোচ্চার।
বিশ্লেষকদের মতামত
আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষক ড. মোহাম্মদ তাহমিদুল ইসলাম বলেন, “ট্রাম্পের এই ঘোষণা যদি বাস্তবায়ন হয় এবং আলোচনায় ইতিবাচক অগ্রগতি আসে, তাহলে তা ইউক্রেন সংকটের সমাধানের পথে বড় ধরনের মোড় আনতে পারে। তবে বিষয়টি কূটনৈতিকভাবে অনেক জটিল, বিশেষ করে তিনি এখনো রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় না থাকায় তার ভূমিকা আনুষ্ঠানিক নয়।”