নিজস্ব প্রতিবেদক ||
ঢাকা, ২৪ মে:
জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের (এনইসি) সভা শেষে শনিবার (২৪ মে) রাজধানীর শের-ই-বাংলা নগরের পরিকল্পনা কমিশন প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত হয়েছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের একটি অনির্ধারিত বৈঠক। প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ বৈঠকে দেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি, নির্বাচনের পূর্বপ্রস্তুতি এবং কাঠামোগত সংস্কার নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়।
বৈঠকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ওপর অর্পিত তিনটি প্রধান দায়িত্ব— নির্বাচন আয়োজন, প্রশাসনিক ও রাজনৈতিক সংস্কার, এবং বিচারিক স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা—এই তিন বিষয়ে কেন্দ্রীয় আলোচনা হয়। উপদেষ্টারা স্ব স্ব দপ্তর থেকে প্রাপ্ত তথ্য ও পর্যবেক্ষণ তুলে ধরেন এবং পরবর্তী করণীয় নির্ধারণে মতামত প্রদান করেন।
উপদেষ্টা পরিষদের বিবৃতি
বৈঠক শেষে উপদেষ্টা পরিষদের পক্ষ থেকে একটি আনুষ্ঠানিক বিবৃতি জারি করা হয়। এতে বলা হয়, “সুষ্ঠু, অবাধ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের পথ সুগম করতে হলে প্রশাসনিক দুর্বলতা দূর করা, রাজনৈতিক দলগুলোর আস্থা অর্জন এবং বিচার ব্যবস্থার প্রতি জনআস্থা পুনরুদ্ধার এখন সময়ের দাবি। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এ তিনটি দায়িত্ব যথাযথভাবে পালনে বদ্ধপরিকর।”
বিবৃতিতে আরও উল্লেখ করা হয়, “জাতির এই ক্রান্তিকালে কোনো দলীয় স্বার্থ নয়, রাষ্ট্রীয় স্বার্থকে অগ্রাধিকার দিয়েই আমরা কাজ করছি। দেশের ভবিষ্যৎ নির্ধারণে স্বচ্ছ ও গ্রহণযোগ্য একটি নির্বাচনী প্রক্রিয়া নিশ্চিত করতে যা যা করণীয়, সরকার তা করবে।”
উপস্থিত উপদেষ্টাগণের মতামত
বৈঠকে অর্থনীতি, আইন ও প্রশাসন সংশ্লিষ্ট উপদেষ্টারা উপস্থিত ছিলেন। আলোচনায় প্রশাসনিক সংস্কার দ্রুত বাস্তবায়ন, দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান এবং নির্বাচন কমিশনের পূর্ণ স্বাধীনতা নিশ্চিত করার বিষয়টিকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, নির্বাচন সামনে রেখে এমন উচ্চপর্যায়ের বৈঠক এবং স্পষ্ট নীতিগত অবস্থান জনগণের আস্থাবৃদ্ধিতে সহায়ক হবে। তবে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, নীতি ঘোষণার পাশাপাশি তার কার্যকর বাস্তবায়নই এখন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।
রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া
বৈঠক ও বিবৃতির বিষয়ে এখনও কোনো রাজনৈতিক দলের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। তবে সূত্র বলছে, কয়েকটি রাজনৈতিক দল এই উদ্যোগকে ইতিবাচকভাবে দেখলেও কিছু দল সরকারের নিরপেক্ষতা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছে।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কার্যক্রম ও কর্মপরিকল্পনা ঘিরে আগামীদিনে দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন মাত্রা যোগ হতে পারে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।