📅 তারিখ: ৪ জুন ২০২৫ | 📍 ঠাকুরগাঁও জেলা | 🖋️ নিজস্ব প্রতিবেদক
ঠাকুরগাঁও জেলার রাণীশংকৈল উপজেলার নেকমরদ এলাকায় জন্ম নেওয়া ‘কালা বাবু’ নামের এক বিশাল আকৃতির ষাঁড় এবারের কোরবানির বাজারে আলোচনার কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে। কালো রঙ, শান্ত স্বভাব এবং বিপুল ওজনের কারণে এই ষাঁড়টির প্রতি ক্রেতা ও দর্শনার্থীদের আগ্রহ ক্রমেই বাড়ছে।
‘কালা বাবু’ নামের এই ষাঁড়টি স্থানীয় হোটেল ব্যবসায়ী মনোয়ার হোসেনের দীর্ঘ সময়ের সযত্ন পরিচর্যার ফল। মনোয়ার জানান, প্রায় দুই বছর আগে ফ্রিজিয়ান জাতের একটি কালো বাছুর হিসেবে গরুটি কিনে আনেন তিনি। তারপর থেকেই পরিবারের একজন সদস্যের মতো পরিচর্যা করে বড় করে তুলেছেন কালা বাবুকে।
বিশাল আকার, স্বাস্থ্যবান গঠন
কালো রঙ ও শান্ত স্বভাবের জন্যই ষাঁড়টির নাম রাখা হয়েছে ‘কালা বাবু’। মালিকের ধারণা অনুযায়ী, গরুটির ওজন এখন প্রায় ২৫ মণ (প্রায় ৯৩৭ কেজি)। দৈর্ঘ্য ও উচ্চতায় গরুটি স্থানীয় অনেক ষাঁড়ের তুলনায় বিশাল। এলাকার মানুষ প্রতিদিন এই ষাঁড়কে এক নজর দেখতে আসছেন।
খাদ্য খরচেই প্রতিদিন ৮০০ টাকা!
মনোয়ার হোসেন জানান, বর্তমানে ‘কালা বাবু’র প্রতিদিনের খাদ্য খরচ প্রায় ৮০০ টাকা। খাদ্যতালিকায় রয়েছে কাঁচা ঘাস, ভূসি, চালের কুড়া, ভুট্টা, অ্যাংকর ও খৈল। পশুটির স্বাস্থ্য ও শক্তি ধরে রাখতে পুষ্টিকর খাদ্যের কোনো কমতি রাখা হচ্ছে না।
বিশেষ যত্ন ও পরিচর্যা
গরমে গরুটিকে দিনে ২-৩ বার গোসল করানো হয়। এছাড়াও গরুটির আরামের জন্য খামারে ফ্যানের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। মশার উপদ্রব ঠেকাতে প্রতিদিন চারটি কয়েল ব্যবহার করা হয়। মালিক জানান, “মানুষ যেমন গরমে অস্বস্তিতে পড়ে, তেমনি গরুও পড়ে। আমি চেষ্টা করছি যেন গরুটি আরামে থাকতে পারে।”
দর্শনার্থীদের ভিড়
নেকমরদ বাজার ও আশপাশের এলাকা থেকে মানুষজন প্রতিদিন এই বিশাল গরুটি দেখতে আসছেন। কেউ কেউ ছবি তুলছেন, আবার কেউ ভিডিও করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দিচ্ছেন। অনেকেই বলছেন, এবারের কোরবানির হাটে ‘কালা বাবু’ হতে পারে অন্যতম আকর্ষণ।
বিক্রির পরিকল্পনা
এখনো নির্ধারিত দামে গরুটি বিক্রির কথা ভাবেননি মনোয়ার হোসেন। তবে তিনি জানান, ভালো দাম পেলে কোরবানির হাটেই বিক্রি করবেন। ইতোমধ্যে কয়েকজন আগ্রহী ক্রেতা প্রস্তাব দিয়েছেন বলে জানান তিনি।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তার মতামত
রাণীশংকৈল উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. আশরাফুল ইসলাম বলেন, “গরুটির ওজন যদি সত্যিই ২৫ মণ হয়ে থাকে, তবে তা স্থানীয়ভাবে একটি রেকর্ড বলেই ধরা যায়। এটি সুস্থ এবং প্রাকৃতিকভাবে লালন-পালন করা হলে ক্রেতাদের জন্য একটি বড় সম্ভাবনা।”